কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দুর্নীতিসহায়ক: টিআইবি

অর্থনীতি দুর্নীতি দেশ জুড়ে বাংলাদেশ

ঢালাওভাবে কালো টাকা সাদা করার অনৈতিক সুযোগ অনির্দিষ্ট মেয়াদে বাড়ানো নিয়ে অর্থমন্ত্রীর বক্তব্যে বিস্ময় ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। এ প্রবণতা সৎ ও বৈধ আয়ের ব্যক্তি করদাতাকে নিরুৎসাহিত করে খেলাপি সংস্কৃতি তৈরি এবং ‘দুর্নীতিসহায়ক উদার পরিস্থিতি’ তৈরি করবে বলে মনে করে সংস্থাটি।

‘যতদিন অপ্রদর্শিত অর্থ থাকবে, ততদিনই তা ঘোষণার সুযোগ থাকবে’ বলে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের এ বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় গতকাল শনিবার এক বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এসব কথা বলেন।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, কালো টাকা সাদা করার ঢালাও সুযোগ সরকারের দুর্নীতিবিরোধী অবস্থানকে দুর্বল করার মাধ্যমে আইনের শাসন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার যে কোনো চেষ্টাকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলবে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘শূন্য সহনশীলতা’ নীতির প্রতি সামঞ্জস্য রেখে নতুন বাজেটে কালো টাকা সাদা করার ঢালাও সুযোগ বাতিলের দাবি জানিয়েছে সংস্থাটি।

ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, চলতি বাজেটে অর্থের উৎস নিয়ে প্রশ্ন করার বিধান উঠিয়ে দিয়ে বৈধ উপায়ে অর্জিত ‘অপ্রদর্শিত অর্থ’ এবং অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত কালো টাকার মধ্যকার ফারাক একাকার করে দেওয়া হয়েছে। এমন বাস্তবতায় কালো টাকা সাদা করার ঢালাও সুযোগ অনির্দিষ্ট মেয়াদে রাখার পরিকল্পনা দেশের কর ব্যবস্থায় ন্যায় ও ন্যায্যতার প্রশ্নকে প্রকট করে তুলবে। এটা দুর্নীতিবাজদের জন্য করোনাকালীন নতুন প্রণোদনা হিসেবে বিবেচিত হবে।

মাত্র ১০ শতাংশ কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ থাকলে সৎ করদাতারা কেন সর্বোচ্চ ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ কর দেবেন- এমন প্রশ্ন তুলে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, এমন সুযোগে সাময়িকভাবে সরকার কিছুটা রাজস্ব পেলেও ধীরে ধীরে বড়সংখ্যক করদাতাদের খেলাপি হতে উৎসাহিত করবে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে রেকর্ড ১৪ হাজার কোটি টাকার বেশি অর্থ বৈধ হওয়ার খবরে নীতনির্ধারক মহলে যে সন্তুষ্টি দেখা দিয়েছে, তা সরকারের দুর্নীতিবিরোধী অবস্থানের প্রতি এক রকম উপহাস।

তিনি বলেছেন, অতিমারির মধ্যেও বিপুল অর্থ সাদা করার প্রবণতা বলে দেয়, দেশে একটি দুর্নীতিসহায়ক ব্যবস্থা বিদ্যমান এবং যে কোনো পরিস্থিতিতেই নিজেদের স্বার্থে তাকে কাজে লাগাতে প্রস্তুত দুর্নীতিবাজরা।