একটা পা কাটছি ১৪ বছর আগে। এখন আরেকটা পা কাটতে হইছে। চলাফেরা করার আর কোনো উপায় নেই আমার। একটা হুইল চেয়ার যদি পাইতাম শেষ জীবনটা কোনো ভাবে চলাফেরা করতে পারতাম। হাসপাতাল ওয়ার্ডে কান্না জড়িত কন্ঠে আক্ষেপ করে সোমবার (২৪ মে) এমন কথাগুলো বলছিলেন বৃদ্ধ সৈয়দ আলী (৮০)।
নেত্রকোনার মদন উপজেলার পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ড মনোহরপুর গ্রামের মৃত আব্দুল খালেকের ছেলে সৈয়দ আলী। ২ ছেলে, ২ মেয়ে ও স্ত্রী নিয়ে তার সংসার ভালোই চলছিলো। ছেলে মেয়েরা বিয়ে করে নিজেদের সংসার নিয়ে ব্যস্ত। স্ত্রীকে নিয়ে নানা দুঃখে কষ্টে জীবন যাপন করছিলেন তিনি। বাত ব্যাথ্যা জনিত রোগে ১৪ বছর আগে তার একটি পা কাটতে হয়।
আয় উপার্জন বন্ধ হওয়ায় স্ত্রী পরিস্কার বানু বাড়িতে একটা ছোট দোকান নিয়ে বসেন। দোকানে যা আয় হয় তা কোনো রকম খেয়ে পড়ে চলে তাদের জীবন। কিন্তু ১৭ দিন আগে ওই বৃদ্ধের আরেকটি পা কাটতে হয়। দুইটি পা হারিয়ে বর্তমানে মদন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এমন অবস্থায় একটি হুইল চেয়ার তার খুবই প্রয়োজন।
বৃদ্ধের স্ত্রী পরিস্কার বানু বলেন, মুক্তিযুদ্ধের আগে আমাদের বিয়ে হয়। তখন থেকে নানা সুখে দুঃখে আমাদের জীবন ভালোই যাচ্ছিল। হঠাৎ অসুস্থ হলে একটি পা কাটতে হয়। এখন আরেকটি পা কাটায় আমার স্বামীর চলাফেরার খুব কষ্ট হচ্ছে। বয়স হয়েছে তাই নিজের শরীরে শক্তি নেই। একা একা এদিক সেদিক নিতেও পারি না। সরকার যদি আমাদেরকে একটা ব্যবস্থা করে দিতো। এসব কথা বলে তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।