রাজধানীর বাজারগুলোতে সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে। তবে কমেছে পাকিস্তানি কক বা সোনালী মুরগির দাম। এতে লাল লেয়ার মুরগির থেকেও এখন কম দামে পাওয়া যাচ্ছে সোনালী মুরগি।
শুক্রবার (২৮ মে) বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে সবজির চাহিদা বাড়লেও সরবরাহ বাড়েনি। বরং কিছু কিছু সবজির সরবরাহ কমে গেছে। এসব কারণে দাম কিছুটা বেড়েছে।
অন্যদিকে, সোনালী মুরগির দাম কমার বিষয়ে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ঈদের পর থেকেই সোনালী মুরগির দাম কমছে। দফায় দফায় দাম কমে এই মুরগির দাম কেজিপ্রতি লেয়ার মুরগির চেয়েও কমে গেছে।
তারা বলছেন, সোনালী মুরগির দাম সাধারণত লেয়ার মুরগির প্রায় দ্বিগুণ থাকে। কিন্তু এখন সোনালী মুরগির দাম কমলেও লেয়ারের দাম কমেনি। সেই সঙ্গে অপরিবর্তিত রয়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম।
বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, ব্যবসায়ীরা আগের সপ্তাহের মতো ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৪০ টাকায় বিক্রি করছেন। লাল লেয়ার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা। আর সোনালী মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২১০ থেকে ২৩০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ২৩০ থেকে ২৫০ টাকার মধ্যে।
রামপুরার ব্যবসায়ী সানাউল বলেন, লেয়ার মুরগির থেকে এখন সোনালী মুরগি কম দামে বিক্রি হচ্ছে। এতে আমরাও অবাক হচ্ছি। কারণ সচরাচর সোনালী মুরগির দাম লেয়ার মুরগির প্রায় দ্বিগুণ থাকে।
তিনি আরও বলেন, ঈদের পর থেকেই সোনালী মুরগির দাম কমছে। সোনালী মুরগির দাম যে হারে কমছে তাতে আমাদের ধারণা ছিল লেয়ার মুরগির দামও কমে যাবে। কিন্তু তেমনটা হয়নি। তবে এই মুরগির চাহিদা কমেছে।
মুরগির দামের বিষয়ে খিলগাঁওয়ের ব্যবসায়ী মো. জুয়েল বলেন, ঈদের পর কিছুদিন ব্রয়লার মুরগির চাহিদা কম ছিল। এখন বাজারে ব্রয়লার মুরগির প্রচুর চাহিদা রয়েছে। এত চাহিদা না থাকলে ব্রয়লার মুরগির কেজি ১২০ টাকায় নেমে আসত।
তিনি বলেন, সোনালী মুরগি দাম কমে যাওয়ায় মানুষ এখন এই মুরগি কিনছে বেশি। বাজারেও সোনালী মুরগির সরবরাহ অনেক ভালো। তবে আমাদের ধারণা কিছুদিনের মধ্যে এর দাম বেড়ে যেতে পারে।
এদিকে, সবজি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে আগের মতো ফুলকপির পিস বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। বেগুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকায়।
সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে শসা, বেগুন, পটল, ঢেঁড়সের দাম। মানভেদে শসার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ২৫ থেকে ৩৫ টাকার মধ্যে। পটলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩০ থেকে ৪০ টাকা। ঢেঁড়সের দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়।
দামবৃদ্ধির এ তালিকায় রয়েছে বরবটি, কাঁচকলা, পাকা টমেটো, গাঁজর। গত সপ্তাহে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া বরবটির দাম বেড়ে ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৩০ টাকা হালি বিক্রি হওয়া কাঁচকলার দাম বেড়ে ৪০ টাকা হয়েছে।
গাজরের দাম বেড়ে কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫০ থেকে ৬০ টাকা। পাকা টমেটোর কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩০ থেকে ৪০ টাকা।
এছাড়া, ঝিঙে আগের মতো ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। লাউয়ের পিস বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। এক কেজি কচুর লতি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। পেঁপের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। উস্তের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা।
সবজির দামের বিষয়ে কারওয়ানবাজারের ব্যবসায়ী সবুর আলী সরদার বলেন, এখন সবজির দাম একটু বাড়বে এটাই স্বাভাবিক। কারণ বাজারে এখন সরবরাহ তুলনামূলক কম। সামনে সবজির দাম আরও বাড়তে পারে।
মালিবাগের ব্যবসায়ী আলী ইমাম বলেন, শীতের সবজি আসার আগে সবজির দাম কমার সম্ভাবনা কম। বরং এখন দিন যত যাবে পাকা টমেটো, গাজরসহ বিভিন্ন সবজির দাম বাড়বে। তবে পটলের দাম একটু কমতে পারে। কারণ শিগগিরই বাজারে পটলের সরবরাহ বাড়বে।