অ্যাকুয়ারিয়াম মানেই যেন গোল্ডফিশ। ওদের দিকে তাকালে মন ভালো না হয়ে উপায় কী! আদরের পোষ্য তালিকায় ওদের নাম থাকবে ওপরের দিকেই। বর্ণিল, প্রাণবন্ত, সস্তাও বটে—কাজেই জনপ্রিয় হওয়ার সব যোগ্যতা আছে এই গোল্ডফিশের। তবে একটা ‘অপবাদ’ও আছে ওদের নামে। অপবাদ না বলে বৈশিষ্ট্য বলাই যুক্তিযুক্ত হবে হয়তো। বৈশিষ্ট্যটা হলো ওদের স্মৃতিশক্তি নাকি মোটে তিন সেকেন্ডের। এটাকে পৃথিবীর অন্যতম প্রচলিত এক তথ্য বললে মোটেও বাড়াবাড়ি হবে না। কোনো মানুষ বা গোষ্ঠীর স্মৃতিশক্তি কমজোরি হলে বলা হয় গোল্ডফিশ মেমোরি। আসলেই কি গোল্ডফিশের স্মৃতিশক্তি তিন সেকেন্ডের?
প্রথম কথা হলো এ তথ্যের কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। তবু বছরের পর বছর ধরে মাছটির স্মৃতিশক্তিবিষয়ক এ তথ্য অনেকেই বিশ্বাস করেন। অস্ট্রেলিয়ার ম্যাককুয়ারি ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক মৎস্য বিশেষজ্ঞ কালাম ব্রাউন বলেন, ‘এ বিভ্রান্তিটা পৃথিবীর যেকোনো জায়গায় মোটামুটি একই। কোথাও হয়তো বলা হয় গোল্ডফিশের স্মৃতিশক্তি দুই সেকেন্ডের, আবার কোথাও বলা হয় ১০ সেকেন্ডের। তবে সেটা সব সময় স্বল্পই হয়ে থাকে।’
বাস্তবে গোল্ডফিশের স্মৃতিশক্তি আরও দীর্ঘমেয়াদি। যা সপ্তাহ, মাস, এমনকি বছর পর্যন্ত গড়াতে পারে। আর এর পেছনে বিজ্ঞানের যুক্তি ৬০ বছরের বেশি সময় ধরে একই। ব্রাউন বলেন, ‘গোল্ডফিশের স্মৃতিশক্তি যে ভালো, তা আমরা পঞ্চাশ–ষাটের দশক থেকেই জানি। মানুষ যা–ই বলুক না কেন, গোল্ডফিশরা বেশ বুদ্ধিসম্পন্ন।’
অধ্যাপক ব্রাউন গোল্ডফিশসহ নানান মাছের বুদ্ধিমত্তা নিয়ে ২৫ বছরের বেশি সময় ধরে গবেষণা করছেন। তিনি মনে করেন, এই যে ভুল ধারণাগুলো আমরা পোষণ করি, তার মূলে আছে মাছের বুদ্ধিমত্তা সম্পর্কে অবহেলা এবং তাদের ছোট ছোট ট্যাংকে বা পাত্রে রাখা।