আফছানা খাতুন, বয়স দশ বছর। জন্মের পর থেকেই দুটি’ পায়েই বাঁকা। প্রতিবন্ধি এই শিশু চলাফেলা করে হামাগুড়ি দিয়ে।
দিন মজুর বাবা আজিমুল হক এক মাত্র মেয়েকে জন্মের পর থেকে চিকিৎসা করালেও তার মেয়ের বাঁকা পাঁ দুইটি ভাল হয়নি। মেয়ের চিকিৎসার পিছনে অনেক টাকা-পয়সা খরচ করলেও তাকে পুরোপুরি সুস্থ করতে পারেনি।
বাবা-মা তার প্রতিবন্ধী মেয়েকে স্কুলে ভর্তি করালেও হাঁটতে না পাড়ায় সে স্কুল যেতে পারে না। বাড়িতেই কোন রকমেই পড়ালেখা করে আফছানা খাতুন। স্কুলে পরীক্ষাসহ বিশেষ কোন কাজ থাকলে বাবা আজিমুল তার মেয়েকে ঘাঁড়ে করে স্কুলে নিয়ে যান।
আফছানার বাবা আজিমুল হক দিনমজুরির কাজ করে বৃদ্ধ মা, স্ত্রী-সন্তানসহ চার সদস্যের সংসারে কোন রকমেই জীবন-জীবিকা করছেন। অসহায় এই গরীব দিনমজুর বাবার সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরানোর অবস্থা। সেখানে একমাত্র প্রতিবন্ধি সন্তানের জন্য একটি হুইল চেয়ার কেনা আজিমুল হকের স্বপ্ন ছাড়া আর কিছুই না।মেয়ে বড় হয়ে যাচ্ছে তারপরেও অসহায় এই পিতার পক্ষে সম্ভব হয়ে ওঠেনি একটি হুইল চেয়ার কিনে দেবার স্বামর্থ্য। তাই সরকার ও সমাজের বিত্তবানদের কাছে অসহায় এই পিতার আবেদন মেয়ের জন্য একটি হুইল চেয়ার পাবার জন্য।
দিনমজুর আজিমুল হকের বলেন, মুই মানষের বাড়ি কামলা দিয়া খাং। কামলা খাটিয়া যা পাং তা দিয়া ৪ জনের সংসার অনেক কষ্টে খায়া না খায়া বেঁচে আছং ভাইও। একটা মাত্র ছোয়া মোর। অভাবের জন্য বেটি কোনার জন্য
এখ্যান হুইল চেয়ার কিনে দিবার পাং না। সরকারে হোক আর অন্য কাইও যদি মোর মাইয়াডাকে এ্যাখান চেয়ার দিলে হয় ভাইও মুই খুব খুশি হনু হয়। মোর মাইয়াডা সোগ সময় মাটিত হাংগুর দিয়া এ ঘর-বাইরত বের হয়। এ্যাখান হুইল
চেয়ার হইলে মাইয়াডার মাটিত থাকার কষ্ট দুর হইল হয় গো ভাই। বেটি কোন বড় হবাইছে,চেয়ার না থাকলে বড় হয়া ক্যাদন করি চলবে এমন চিন্তায় ঘুমবার পাং না। কান্না জড়িত কন্ঠে এভাবেই কথাগুলো বললেন।
অসহায় এই পিতার বাড়ি ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের কুরুষা ফেরুষা গ্রামে। জন্মের পর থেকেই তার মেয়ের দুটি পাঁ অচল। কোন রকমেই মাটিতে হামাগুড়ি দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। দরিদ্র এই পরিবার একটি হুইল চেয়ার কেনার সামর্থ্য না থাকায় মেয়ের জন্য সরকার ও সমাজের বিত্তবানদের কাছে একটি হুইল চেয়ারের আকুতি জানিয়েছেন বাবা আজিমুল হক।
প্রতিবেশি জাহাঙ্গীর আলম জানান, কোন রকমেই দিন মজুরের কাজ করে যা আয় করে তা দিয়েই সংসার চলে। এ
বছর শিশুটির প্রতিবন্ধী ভাতার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পরিবারে একটি হুইল চেয়ার কেনার সামর্থ তাদের নাই। তাই
সমাজের কোন দানশীল বিত্তবান, মহৎ ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যদি অসহায় শিশুটিকে একটি হুইল চেয়ার দিয়ে সহযোগিতা করে তাহলে প্রতিবন্ধি এই মেয়েরটির অনেক বড় উপকার হবে দাবী জানান এ প্রতিবেশি।