বাংলাদেশে গত দুই সপ্তাহে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার বেড়ে যাওয়ায় পহেলা জুলাই বৃহস্পতিবার থেকে এক সপ্তাহের জন্য ‘সার্বিক কার্যাবলি/চলাচলে’ নতুন ২১ দফার বিধি-নিষেধ জারি করেছে কর্তৃপক্ষ। এই এক সপ্তাহের মধ্যে ‘অতি জরুরি প্রয়োজন ব্যতীত’ বাড়ির বাইরে বের হলে ‘আইনানুগ ব্যবস্থা’ গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশে গত দুই সপ্তাহে করোনভাইরাস সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার বেড়ে যাওয়ায় আগের বিধিনিষেধের সাথে নতুন কিছু শর্ত যোগ করে সোমবার থেকে তিনদিনের লকডাউন জারি করা হয়েছিল। আগামীকাল থেকে এক সপ্তাহের জন্য আরো কঠোর লকডাউন বাস্তবায়ন করার উদ্দেশ্যে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
আগামীকাল সকাল ৬টা থেকে ৭ই জুলাই রাত ১২টা পর্যন্ত এই লকডাউন কার্যকর থাকবে। এই লকডাউনে যেসব বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে সেগুলো হল:
কাঁচা বাজার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দোকান সকাল ৯টা থেকে ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। তবে ক্রয়-বিক্রয় করতে হবে উন্মুক্ত স্থানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে।
খাবারের দোকান ও রেস্তোরাঁ সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। তবে তারা শুধু খাবার বিক্রি করতে পারবে, দোকানের ভেতরে গ্রাহককে সেবা দেয়া যাবে না। সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্বশাসিত ও বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে।
স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় শিল্প কারখানা চালু থাকবে। শপিং মল, মার্কেট, দোকানপাট বন্ধ থাকবে। পর্যটন কেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার বন্ধ থাকবে। জনসমাবেশ হয় এ ধরণের সামাজিক অনুষ্ঠান, যেমন বিয়ে, জন্মদিন, পিকনিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান করা যাবে না।
সব ধরণের যন্ত্রচালিত যানবাহন বন্ধ থাকবে। পণ্য পরিবহনে নিয়োজিত ট্রাক, লরি, কাভার্ড ভ্যান, কার্গো ভেসেল নিষেধাজ্ঞার আওতার বাইরে থাকবে। বিমান, নৌ ও স্থল বন্দরের সাথে সম্পৃক্ত অফিস এই বিধিনিষেধের আওতার বাইরে থাকবে।
আইন শৃঙ্খলা, জরুরি পরিষেবা, খাদ্যদ্রব্য পরিব্হণ ত্রাণ বিতরণ, রাজস্ব আদায়, টেলিফোন ও ইন্টারনেট (সরকারি ও বেসরকারি) গণমাধ্যম সংশ্লিষ্ট অফিসের কর্মীরা ও যানবাহন প্রাতিষ্ঠানিক পরিচয় দেখিয়ে যাতায়াত করতে পারবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যাংকিং সেবা চালু থাকবে। টিকা কার্ড দেখিয়ে কোভিডের টিকা গ্রহণ করতে যাওয়া যাবে
অভ্যন্তরীন ফ্লাইট বন্ধ থাকবে, তবে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু থাকবে এবং বিদেশগামী যাত্রীরা আন্তর্জাতিক ভ্রমণের টিকেট দেখিয়ে গাড়ি দিয়ে যাতায়াত করতে পারবে
স্বাস্থ্যবিধি মেনে মসজিদে নামাজের বিষয়ে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে হবে।
বেসামরিক প্রশাসনের সহায়তায় সেনাবাহিনী মাঠ পর্যায়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক সেনা মোতায়েন করবে।
আদালত পরিচালনার বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করবে সুপ্রীম কোর্ট।
প্রত্যেক জেলার ম্যাজিস্ট্রেট নিজ জেলার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে সমন্বয় সভার মাধ্যমে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর টহলের অধিক্ষেত্র, সময় ও এলাকা নির্ধারণ করবেন। মাঠ পর্যায়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ নিশ্চিত করবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বাহিনীকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজনীয় ক্ষমতা প্রদান করতে পারবেন।
অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া (ওষুধ ও নিত্য প্রয়োজনীয় কেনাকাটা, চিকি’ৎসা সেবা, মৃ’তদে’হ দাফ’ন/স’ৎকার) বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে না। নির্দেশনা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।