pori moni - bdnews 1971

পরীমণির পক্ষে প্রথমবার রাজপথে নামলেন শিল্পী-নির্মাতারা

বিনোদন

বিনোদন ডেস্ক- মাদকের মামলায় গ্রেপ্তার চিত্রনায়িকা পরীমনির জন্য ন্যায়বিচার চেয়ে এক মানববন্ধনে শামিল হলেন চলচ্চিত্র ও টিভি নাটকের নির্মাতা, অভিনয়শিল্পীরা। গত ৪ অগাস্ট ঢাকার বনানীর বাসায় র‌্যাব অভিযান চালিয়ে পরীমনিকে গ্রেপ্তারের পর তাকে তিন দফায় রিমান্ড শেষে শনিবার কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

শনিবার বিকালে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে ‘পরীমনির জন্য ন্যায়বিচার চাই’ ব্যানারে এক সমাবেশে দাঁড়ান চলচ্চিত্র ও টিভি নাটকের নির্মাতা, অভিনয়শিল্পী, চিত্রনাট্যকারসহ নানাজন।

পরীমনিকে গ্রেপ্তারের পর শিল্পী-নির্মাতাদের মধ্যে কেউ কেউ তার ন্যায়বিচার চেয়ে ফেইসবুকে সোচ্চার থাকলেও রাজপথে দেখা যায়নি; শিল্পী-নির্মাতাদের একাংশের তরফ থেকে প্রথমবারের মতো ‘শিল্পীর পাশে’ প্লাটফর্মের আয়োজনে ন্যায়বিচারের দাবি নিয়ে এলেন অনেকে।

 

মানববন্ধনে নাট্যশিল্পী আবুল কালাম আজাদ বলেন, দেশে লুটপাট ও বিচারহীনতার সংস্কৃতি চলছে। এর বিপরীতে একজন মানুষকে পাওয়া গেছে, যাঁর ওপর সবধরনের নির্যাতন চালানো যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো উপাদান হচ্ছে নারী। তিনি যদি মডেল কিংবা অভিনেত্রী হন, সেটা আরও ভালো।

তিনি বলেন, ‘এই সুযোগই যেন প্রশাসন নিচ্ছে। এর অন্তরালে কারা আছেন, আমি জানি না। আমি নিশ্চিত, ভীষণ শক্তিশালী একটি পক্ষ আছে, যারা এগুলো করাচ্ছে। এটি ভীষণভাবে অমানবিক একটি প্রক্রিয়া।’

 

পরীমনিকে গ্রেপ্তার প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে তিন–তিনবার রিমান্ডে নেওয়া এবং একই সঙ্গে ‘মিডিয়া ট্রায়ালের’ জন্য উসকে দেওয়া একটি বেআইনি কাজ বলে উল্লেখ করেন চলচ্চিত্র পরিচালক গিয়াসউদ্দিন সেলিম। তিনি বলেন, ‘আইনের রক্ষকেরা আইন ভঙ্গ করেছেন। পরীমনি একজন অভিনয়শিল্পী এবং বাংলাদেশের নাগরিক। আমরা পরীমনির জামিন চাই। আইন সবার জন্য সমান হোক।’

 

অভিনয়শিল্পী ঝুনা চৌধুরী বলেন, ‘একজন শিল্পী কোনো সমস্যায় পড়লে তাঁর পাশে দাঁড়ানো অন্য শিল্পীদের দায়িত্ব। আমরা সব সময়ই নারীকে পণ্য হিসেবে প্রদর্শনের বিরুদ্ধে। এই মুহূর্তে নারী শিল্পীদের নিয়ে এ ধরনের মনোভাব প্রশাসন থেকে শুরু করে অন্য সব জায়গায় দেখা যাচ্ছে। আমরা এর নিন্দা জানাই।’

 

তিনি বলেন, ‘যেসব শিল্পীকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে, তাঁরা আদালতে দোষী প্রমাণিত হওয়ার আগেই যে ধরনের কটূক্তি ও অশ্রাব্য কথাবার্তা বলা হচ্ছে, সেগুলোরও নিন্দা জানাই। যেকোনো শিল্পীর প্রতি অবিচার ও অনাচারের বিরুদ্ধে আমরা সোচ্চার থাকব।’

 

অভিনয়শিল্পী ও মঞ্চ নির্দেশক মোহাম্মদ বারী বলেন, ‘একটি ন্যায্য দাবির পক্ষে আমরা এখানে দাঁড়িয়েছি। পরীমনির মূল পরিচয় তিনি একজন শিল্পী। তাঁকে যেভাবে গ্রেপ্তার করা হলো এবং যে প্রক্রিয়া চলছে, তা জনমনে সংশয় সৃষ্টি করছে।’ তিনি বলেন, দেশে একটি লুটেরা ধনিক গোষ্ঠী তৈরি হয়েছে।

এই গোষ্ঠীর লোভের বহিঃপ্রকাশ এই পরিস্থিতি। এই ধরনের মামলায় কখনোই তিনবার রিমান্ডে নেওয়ার রেকর্ড পাওয়া যায় না। সংশয়টা সেখানেই। মানববন্ধনে শিল্পী-নির্মাতাদের মধ্যে আরও বক্তব্য দেন নোমান রবিন, গাজী মাহবুব, শহিদ উন নবী, অপরাজিতা সঙ্গীতা, উম্মে হাবিবা প্রমুখ।