১৬ বছরের অপেক্ষা, চট্টগ্রাম আদালতে বো’মা হা’মলা মাম’লার রায় রোববার

জাতীয়

আদালত ভবনে পুলিশ চেক পোস্টে আত্মঘাতী বো’মা হা’মলা মাম’লার রায় ঘোষণা হতে যাচ্ছে আগামীকাল রোববার (৩ অক্টোবর)। চট্টগ্রাম স’ন্ত্রাস দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আব্দুল হালিমের আদালতে রাষ্ট্রপক্ষ ও আ’সা’মিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে গত ২১ সেপ্টেম্বর রায়ের জন্য এ তারিখ নির্ধারণ করে আদালত।

 

এর মধ্যে দিয়ে দীর্ঘ ১৫ বছর ১০ মাস পর নিষ্পত্তি হতে চলেছে চাঞ্চল্যকর এই মা’মলা। সাক্ষীদের হাজির করতে না পারায় এত সময় লেগেছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

২০০৫ সালের ২৯ নভেম্বর এ বো’মা হা’মলার ঘটনা ঘটে। ১৬ বছর পর ‘বো’মা হা’মলা মা’মলার এ রায়কে ঘিরে আগামীকাল রোববার সকাল থেকে আদালত চত্বরে নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

 

আদালত সূত্রে জানা যায়, কোতোয়ালী থানার মা’মলা নং- ৩৮(১১)২০০৫। বো’মা হা’মলার পরের বছর ২০০৬ সালের ১৮ মে চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের তৎকালীন পরিদর্শক হ্লা চিং প্রু জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমান্ডার জাবেদ ইকবাল ওরফে

 

মোহা’ম্মদ ও বো’মা তৈরির কারিগর জাহিদুল ইসলাম ওরফে বো’মারু মিজানসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে ২০০৬ সালের ১৬ জুলাই মা’মলাটির অভিযোগ গঠন করা হয়। এর মধ্যে অন্য একটি মা’মলায় বাকি তিনজন, নিষিদ্ধ ঘোষিত জ’ঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি) প্রধান শায়খ আবদুর রহমান, তার সেকেন্ড ইন কমান্ড ছিদ্দিকুর রহমান ওরফে বাংলা ভাই এবং

 

জেএমবির সামরিক কমান্ডার আতাউর রহমান সানি নামের তিন আ’সামির ফাঁসির আদেশ হয়। ফলে এ মা’মলা থেকে তাদের বাদ দেওয়া হয়েছিল। চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে ২০০৬ সালের ১৬ জুলাই মা’মলাটির অভিযোগ গঠন করে। পরে মা’মলার বিচার চলছিল প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে। ২০০৮ সালে মা’মলাটি চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়। সাক্ষীরা হাজির না হওয়ায় ১৩৫ কার্যদিবসের মধ্যে

মা’মলাটি নিষ্পত্তি করা যায়নি। পরে মা’মলাটি প্রথম অতিরিক্ত চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে ফেরত যায়। পরে পুনঃরায় ২০১৬ সালের অক্টোবর মাসে মা’মলাটি চট্টগ্রাম বিভাগীয় ট্রাইব্যুনালে পাঠান চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ। ২০১৮ সালে চট্টগ্রাম স’ন্ত্রাস দমন ট্রাইব্যুনালের গঠন করা হলে চট্টগ্রামের

 

জ’ঙ্গিদের সব মা’মলা এই ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়। একই বছর ৬ আগস্ট মা’মলাটি স’ন্ত্রা’স দমন ট্রাইব্যুনালে রিসিভ করেন। চট্টগ্রাম স’ন্ত্রাস দমন ট্রাইব্যুনালের মা’মলা নম্বর ৬৭/২০১৮। মা’মলার একমাত্র আটক আসামী জ’ঙ্গি জাবেদ ইকবাল কারাগারে আটক আছেন। বো’মা মিজানকে ২০১৪ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারিতে

 

গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে হাজিরা দেওয়ার জন্য ময়মনসিংহের আদালতে নেওয়া হয়। পথে ত্রিশাল এলাকায় প্রিজন ভ্যানে হা’মলা চালিয়ে পুলিশের কাছ থেকে তিন জ’ঙ্গিকে ছিনিয়ে নেয় অন্য জ’ঙ্গিরা। এর মধ্যে একজন ‘বো’মা মিজান। এরপর বো’মা মিজানকে আর গ্রেফতার করা যায়নি।

 

জ’ঙ্গি হা’মলায় আ’হত এক পুলিশ সদস্য জানান, প্রায় ১৬ বছর পরে জ’ঙ্গি হা’মলার রায় দেখে যেতে পারবো, সেটা আনন্দের। জ’ঙ্গিদের এমন শাস্তি হোক, যাতে কেউ এ পথে আর পা না বাড়ায়।

 

চট্টগ্রাম স’ন্ত্রাসবি’রো’ধী ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি মনোরঞ্জন দাশ বাংলানিউজকে বলেন, মাম’লায় রাষ্ট্রপক্ষ ৩২ জনের সাক্ষী আদালতে হাজির করেছেন। আসামী পক্ষে আসামী জাবেদ ইকবাল নিজেই সাক্ষী দিয়েছেন। সাক্ষীদের সাক্ষ্যপ্রমাণ এবং আলামত জব্দের মধ্য দিয়ে আ’সামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে রাষ্ট্র পক্ষ সক্ষম হয়েছে। তাই এই মা’মলায় আসা’মির সর্বোচ্চ সাজা আশা করছি।

 

উল্লেখ্য, ২০০৫ সালের ২৯ নভেম্বর সকালে চট্টগ্রাম আদালত ভবনের পুলিশ চেক পোস্টের সামনে বো’মা হা’মলা চালায় জ’ঙ্গিরা। ঘটনাস্থলে মারা যান পুলিশ কনস্টেবল রাজীব বড়ুয়া ও ফুটবলার শাহাবুদ্দীন। আ’হত হন পুলিশ কনস্টেবল আবু রায়হান, সামসুল কবির, রফিকুল ইসলাম, আবদুল মজিদসহ ১০ জন