‘বৃহস্পতিকে আগে কখনোই এ রকম দেখিনি’

বিশেষ প্রতিবেদন

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : বৃহস্পতি গ্রহের নজিরবিহীন মানের ছবি তুলেছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ও শক্তিশালী মহাকাশ দুরবিন জেমস ওয়েব। জুলাইয়ে তোলা ওই ছবিগুলো গত সোমবার প্রকাশ করেছেন নাসার বিজ্ঞানীরা।

নাসার প্রকাশিত ছবিতে আমাদের সৌরজগতের সবচেয়ে বড় গ্রহ বৃহস্পতির আলোকচ্ছটা, বিশালাকার ঝড়, উপগ্রহ ও চারপাশের বলয় এত বিশদভাবে ফুটে উঠেছে যে জ্যোতির্বিদরা ছবিগুলোকে ‘অসাধারণ’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।

জানা গেছে, ছবিগুলো অবলোহিত আলোর (ইনফ্রারেড) হলেও পরে সেগুলোকে কৃত্রিমভাবে রং করে বর্তমানের রূপ দেওয়া হয়েছে।

কারণ অবলোহিত আলো মানুষের চোখে ধরা পড়ে না। ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার জ্যোতির্বিদ ইমকে ডে পাটের বলেন, ‘আমরা বৃহস্পতিকে আগে কখনোই এ রকম দেখিনি। এর পুরোটাই অসাধারণ। সত্যি বলতে, এটি এতটা ভালো হবে, তা ভাবিনি আমরা। ’

এক হাজার কোটি ডলারের জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ (জেব্লিউএসটি) যুক্তরাষ্ট্রের নাসার নেতৃত্বাধীন একটি আন্তর্জাতিক মিশন। ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি এবং কানাডিয়ান স্পেস এজেন্সির সঙ্গে যৌথভাবে এটি বাস্তবায়ন করেছে নাসা।

নাসা জানিয়েছে, বৃহস্পতির যে দৃশ্যটি ছবিতে ফুটে উঠেছে তা আসলে টেলিস্কোপের তোলা একাধিক ছবির মিশ্রিত একটি রূপ। ছবিতে বৃহস্পতির উত্তর ও দক্ষিণ মেরুর ওপরে আলোকচ্ছটা দেখা গেছে। ওই আলোকচ্ছটা সূর্য থেকে দূরে ভাসমান কণাপ্রবাহের কারণে তৈরি হয়।

পৃথিবীতেও এমনটা ঘটে। ছবিতে ‘গ্রেট রেড স্পট’ নামের যে ঝড় স্পষ্টভাবে এসেছে তা আকারে এত বড় যে পুরো পৃথিবীকে গিলে নিতে পারবে।জেডাব্লিউএসটি ২০২১ সালের ডিসেম্বরে উন্মোচন করা হয়। বর্তমানে এর অবস্থান পৃথিবী থেকে ১৬ লাখ কিলোমিটার দূরে।

এক হাজার ৩০০ কোটি বছর আগে ‘বিগ ব্যাং’-এর কিছু সময় পরই পৃথিবীর উদ্দেশে রওনা হওয়া অতি প্রাচীন আলো পর্যন্ত শনাক্ত করতে সক্ষম এটি। এই দুরবিন যন্ত্রটিকে বিখ্যাত হাবল টেলিস্কোপের উত্তরসূরি হিসেবে ধরা হয়। আগামী ২০ বছরে মহাবিশ্বে অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে জেডাব্লিউএসটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলেই ধারণা বিজ্ঞানীদের।