ঈদুল ফিতর এর নামাজ
রমজান মাসের রোজা পালনের পর শাওয়াল মাসের প্রথম তারিখে মুসলিম জাহানে যে আনন্দ উৎসব উদ্যাপিত হইয়া থাকে, উহা ‘ঈদুল ফিতর’ নামে অভিহিত।
‘ঈদুল্ ফিতর আরবী ভাষায় দুইটি শব্দ। ‘ঈদ’ অর্থ খুশী, আনন্দ ; আর ‘ফিতর‘ শব্দেরঅর্থ প্রকৃতি স্বভাব, উপবাস ভঙ্গকরণ। দীর্ঘ একমাস উপবাস ও সংযম সাধনার পর দুনিয়ার মুসলমানরা এই দিনে উপবাস ব্রতহইতে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়া আসে এবং এই উপলক্ষে আনন্দ উৎসব করিয়া থাকে ; এইজন্যই এই উৎসবের নামকরণহইয়াছে ।
ঈদুল ফিতর‘ বা স্বাভাবিকতায় প্রত্যাবর্তন বা উপবাস ব্রত ভঙ্গের উৎসব। মদীনায় পারসীকদের প্রভাবে শরতেরপুর্ণিমায় ‘নওরোজ উৎসব‘ এবং বসন্তের পুর্ণিমায় ‘মিহিরজান উৎসব‘ উদ্যাপিত হইয়া থাকে। এই দুইটি বিজাতীয় উৎসবেররীতিনীতি ইসলামী রীতিনীতির পরিপন্থী ছিল বলিয়া হুযূর (সঃ) মুসলমানদিগকে উহাতে যোগদান হইতে বিরত থাকার নির্দেশদেন এবং তদস্থলে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আয্হা। এই দুইটি উৎসব পালনের রীতি প্রবর্তন করেন । ইসলামের কোনই কাজাতাৎপর্যহীন ও ছাওয়াব শূন্য নয়। এই জন্যই মুসলমানরা আনন্দ উৎসব পালনের সাথে সাথে নানা রকম ইবাদতের মাধ্যমেঅশেষ পূণ্যও হাছিল করিয়া থাকে। আল্লাহ্ তায়ালার মহান দরবারে সম্পূর্ণ আত্মসমর্পণ করার নামই ইসলাম, আর তাঁহার‘তওহীদ‘ বা একত্বের স্বীকৃতিই ইসলাম ধর্মের মূলকথা। মু‘মিন ব্যক্তির আকীদায় আল্লাহ্ তায়ালা সর্বশক্তিমান ও সদাবিরাজমান। এই বিষয়ের আন্তরিক বিশ্বাস, মৌখিক স্বীকৃতি এবং কার্যতঃ ইহার অনুষ্ঠান।এই তিনটি উপাদানের সমাবেশে ঈমানপরিপূর্ণতা লাভ করে । কেবলমাত্র বিশ্বাস অথবা শুধু মাত্র মৌখিক স্বীকৃতির ফলে কেহ খাঁটি মু‘মিন বা সত্যিকার মুসলমানহইতে পারে না। উক্ত উপদানত্রয়ের একত্র সমাবেশের মাধ্যমেই ‘কামেল মু‘মিন হওয়া যায়। দীর্ঘ এক মাস কাল রোজা পালনেরমাধ্যমে মুসলমান বিশ্বাসের স্বীকৃতি ও কার্যতঃ প্রমাণ দিয়া থাকে ; তৎসঙ্গে খোদা–প্রীতি ধর্মনিষ্ঠা, সংযম ও সাধনার
পরিচয়ও দিয়া থাকে। এইভাবে ঈদের দিনে মুসলিম–জীবনের বিশ্বাস ও সাধনার বিজয় ঘোষিত হইয়া থাকে।
ঈদের দিন ও ঈদের রাত্রির ফযীলত
ঈদের দিন ও ঈদের রাত্রির ফজিলত অসীম। হযরত নবী–করীম (দঃ) যে পাঁচটি রাত্রিতে দোয়া কবুল হওয়ারকথা বলিয়াছেন, ঈদুল ফিতরের রাত্রিটি উহাদের অন্যতম ।
হযরত নবী–করীম (দঃ) যে পাঁচটি রাত্রিতে দোয়া কবুল হওয়ার কথাবলিয়াছেন, ঈদুল ফিতরের রাত্রিটি উহাদের অন্যতম ।
হযরত নবী–করীম (দঃ) বলেন, “প্রত্যেক জাতিরই খুশীর দিন থাকে আরআমাদের খুশীর দিন হইতেছে।ঈদুল ফিতরের দিন।”(বোখারী ও মুছলিম)
অপর এক হাদীসে আছে, “যে ব্যক্তি দুই ঈদের রাতদুইটিতে আল্লাহর সন্তোষ লাভ ও নেকী অর্জনের নিয়তে ইবাদতে জাগিয়া কাঁটাইবে, সেইদিন তাহার অন্তর মরিবেনা। যেইদিনসমস্ত অন্তর মরিয়া থাকিবে (অর্থাৎ কিয়ামতের দিনের বিভীষিকা দেখিয়া যখন সকলে ভীত–সন্ত্রস্ত ও আকুল–ব্যাকুল হইয়াপড়িবে, তখন ঐ ব্যক্তি সম্পূর্ণ নির্ভয়ে পরমানন্দের মধ্যে সময় অতিবাহিত করিবে)। (ইবনে মাজা ; তারগীব)
হযরত রাসূলে–পাক(দঃ) আরও বলেন, “ঈদুল ফিতরের দিন উপস্থিত হইলে, আল্লাহ্ তায়ালা মুসলমান রোজাদারদের বিষয়ে ফেরেশতাদের নিকটগৌরব করিয়া থাকেন। তিনি ফেরেশতাদের জিজ্ঞাসা করেন। হে ফেরেশতারা কাহারও উপর কোন কাজের দায়িত্ব দেওয়া হইলে সেযদি পুরাপুরিভাবে উহা পালন করে, তবে তাহাকে কিরূপ প্রতিদান দেওয়া উচিত ? ফেরেশ্তারা বলেন ॥ ‘তাহাকে উহার পুরাপুরিপারিশ্রামিক দেওয়া উচিত।‘ তখন আল্লাহ্ তায়ালা বলেন। “আমি আমার বান্দা ও বান্দীগণের উপর যে কাজের দায়িত্ব ন্যস্তকরিয়াছিলাম, তাহারা যথার্থরূপে তাহা পালন করিয়াছেন।” অতঃপর মুসলমানরা যখন দলে দলে দোয়া করিতে করিতেঈদ্গাহের দিকে রওয়ানা হয়, তখন আল্লাহ্ তায়ালা বলেন ‘আমার ইজ্জতের কছম। আমার শান–শওকত ও প্রতাপ–প্রতিপত্তিরকছম! আমি অবশ্যই তাহাদের দোয়া কবুল করিব।‘ তাহারপর তিনি বান্দা–বান্দিগণের উদ্দেশ্যে ডাকিয়া ডাকিয়া বলেন।
ওহে আমার বান্দা–বান্দিগণ! আমি তোমাদিগকে মা‘ফ করিয়া দিয়াছি, তোমাদের পাপসমূহকে নেকীতেপরিণত করিয়া দিয়াছি ; এবার তোমরা নিজ নিজ গৃহে প্রত্যাবর্তন কর।‘ তখন তাহারা নিষ্পাপ অবস্থায় এবং বিপুল পুণ্যেরঅধিকারী হইয়া স্ব স্ব গৃহে প্রত্যাবর্তন করে।” (বায়হাকী)
ঈদুল আজহার নামাজ
যিলহজ্জ চাঁদের ১০ তারিখে বিশ্ব মুসলিমদের জন্য আরেকটি খুশীর দিন উপস্থিত হয়। তাহা ঈদুল আজহা নামে অভিহিত।‘আজহা‘ শব্দের অর্থ কুরবানী। সারা জাহানের ধনী মুসলমানেরা এই দিনে উট–গরু, ভেড়া–বক্রী–দুম্বা ইত্যাদি পশু আল্লাহ্নামে কুরবানী এবং এই উপলক্ষে আনন্দ উদযাপন করিয়া থাকে। তাই ইহার নাম ঈদুল আজহা বা কুরবানীর উৎসব। আল্লাহ্রাস্তায় পশু কুরবানীর তাৎপর্য ও ফজিলত অপরিসীম । তাই এই দিনের ফজিলতও অপরিসীম।
ঈদের দিনের সুন্নাত ওমুস্তাহাবসমূহ
১। অতি প্রত্যুষে শয্যাত্যাগ করা।
২। মেসওয়াক করা এবং গোসল করা।
৩। নিজের সাধ্য অনুযায়ী উৎকৃষ্ট পোষাক পরিধান করা । ৪ । আতর ইত্যাদি কোন খোশ্ব ব্যবহার করা।
৫। সাধ্য পরিমাণ খাওয়া–দাওয়ায় ধুমধাম করা।
৬। ঈদের নামাযে যাইতে অযথা বিলম্ব না করা।
৭। ঈদুল ফিতরের দিন ঈদগাহে যাওয়ার পূর্বে কিছু মিষ্টান্ন খাওয়া, আর ঈদুল আজহার নামাযের পূর্বে কিছু না খাইয়া নামাযেরপর যথাশীঘ্র সম্ভব পশু কুরবানী করতঃ কুরবানীর গোশ্ত দ্বারা আহার করা ।
৮। ঈদ্গাহে গমণের পূর্বেই ‘ছকায়ে–ফিত্র‘ আদায় করা। ৯। ঈদ্গাহে এক পথে যাওয়া আর ফিরিবার সময় অন্য পথে আসা ।
১০। অসুবিধা না থাকিলে পায়ে হাটিয়া ঈদগাহে যাওয়া। ১১। ঈদের নামায কোনও ময়দানে পড়া ।
১২। ঈদুল ফিতরের দিন ঈদ্গাহে যাওয়ার পথে নীরবে তাক্বীর বলা আর ঈদুল আজহার দিন উঃচ্চ স্বরে তাক্বীর বলা ।(দোঃ মোঃ; বারায়েক)
ঈদের নামাজের ওয়াক্ত
সূর্য উদিত হওয়ার পর যখন এর প্রখরতা বৃদ্ধি পেয়ে চোখ ঝলসাতে শুরু করবে, সে সময় হতে আরম্ভ করেদুপুর হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত ঈদের নামাযের ওয়াক্ত।
ঈদুল ফিতর নামাজের নিয়ত نَوَيْتُ أَنْ أَصَلِيَ لِلَّهِ تَعَالَى رَكْعَتَى صَلوةِ عِيدِ الفِطْرِ مَعَ بلت تكبيراتِ وَاجِبِ اللهِ تَعَالَى اقْتَبَتُ بِهذا الإماممتوجها إلى جهة الكعبة الشريعة الله أكبر *
উচ্চারণ : নাওয়াইতু আন উছাল্লিইয়া লিল্লাহি তায়ালা রাকআতাই ছালাতি ঈদিল ফিতরি মাআ সিত্তাতি তাকবীরাতি ওয়াজিবুল্লাহি তাআলা ইক্তাদাইতু বিহাযাল ইমামি মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা‘বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।
বাংলা নিয়তঃ “আমি ঈদুল ফিতরের দুই রাকআত ওয়াজিব নামায ছয় তাকবীরের সাথে ক্বিবলামুখী হয়ে এই ইমামের পিছনেআদায় করছি আল্লাহু আকবার।”
ঈদুল আযহা নামাজের নিয়ত نويت أنْ أصَلّى الله تَعَالَى رَكْعَتَى صَلوة عيد الأضحى مع سنت تكبيرَاتِ وَاجِبُ اللهِ تَعَالَى اقْتَدَيْتُ بهذاالإمام متوجها إلى جهة الكعبة الشريفة الله اكبر *
উচ্চারণ : নাওয়াইতু আন উছাল্লিইয়া লিল্লাহি তায়ালা রাকআতাই ছালাতি ঈদিল আযহা মায়া সিত্তাতি তাকবীরাতি ওয়াজিবুল্লাহি তাআলা ইক্তাদাইতু বিহাযাল ইমাম মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা‘বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার ।
বাংলা নিয়তঃ “আমি ঈদুল আযহার দুই রাকআত ওয়াজিব নামায ছয় তাকবীরের সাথে কিবলামুখী হয়ে এই ইমামের পিছনেআদায় করছি আল্লাহু আকবার।”
ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা নামাজ আদায়ের নিয়ম
তাক্বীরে–তাহরীমা অর্থাৎ নামায আরম্ভকালীন প্রথম তাক্বীরের পর ইমাম–মুক্তাদী সকলে ‘সানা‘ অর্থাৎ সুবহানাকা আল্লাহুম্মাপড়িয়া তাহারপর ইমাম উচ্চৈস্বরে তিনবার ‘আল্লাহু আকবার‘ বলিবেন। একবার তাক্বীর দেওয়ার পর তিনবার ‘সুবহানাল্লাহ্‘ পড়ার সময় পরিমাণ অপেক্ষা করতঃ আবার তাক্বীর দিবেন । মুক্তাদীগণ ইমামের অনুসরণ করিবে, কিন্তু নীরবে তাক্বীর বলিবে।তাক্বীর বলার সময়ে ইমাম–মুক্তাদী সকলেই আপন আপন হস্তদ্বয় কানের লতি পর্যন্ত উঠাইবে। এই তকবীর গুলির প্রথম দুইতাক্বীরের সময় কানের লতি পর্যন্ত হাত উঠাইয়া তারপর হাত নামাইয়া নাভীর নীচে না বাঁধিয়া শরীরের দুই পার্শ্বে ঝুলাইয়ারাখিবে এবং তৃতীয় তাক্বীর বলিবার জন্য কানের লতি পর্যন্ত হাত উঠাইয়া তাক্বীর বলা শেষ হইলে প্রথম দুইবারের মত হাত পার্শ্বেনা ঝুলাইয়া নাভীর নীচে বাঁধিয়া ফেলিবে। প্রথম রাকয়াতে অতিরিক্ত তিন তাক্বীর আদায়ের ইহা মছনূন–তরিকা। তারপর ইমামআউজুবিল্লাহ্, বিস্মিল্লাহ্, সূরা ফাতেহা ও কোরআন শরীফের কিছু আয়াত পড়িবেন এবং মুক্তাদীগণ চুপ হইয়া সূরা–কেরাতশুনিবে। সূরা–কেরাতের পর যথারীতি রুকু–সেজদা করতঃ সেজদা হইতে সোজাসুজি দাঁড়াইয়া ইমাম দ্বিতীয় রাকাতের সূরা–কেরাত পড়িবেন ; তাহারপর তখনই রুকুতে না যাইয়া অতিরিক্ত তিনি তাকবীর আদায় করিবেন ।
মুক্তাদীরা ইমামের অনুসরণ করিবে। এই তিন তাীর বলার সময় প্রত্যেক বার কানের লতি পর্যন্ত হাত উঠাইয়াতাক্বীর বলার পর দুই হাত দুই পাশে ঝুলাইয়া রাখিবে এবং হাত ঝুলন্ত থাকা অবস্থায়ই তকবীর বলিয়া রুকুতে যাইবে।॥(আলমগিরী)
ঈদের নামাজ শুরু হয়ে গেলে করণীয়
প্রথম রাকাতের অতিরিক্ত তাক্বীর আদায় করা আরম্ভ হইয়া গিয়াছে, এমতাবস্থায় কেহ ঈদের জামায়াতে শরীক হইলে, ইমামেরসঙ্গে যে–কয়েকটি তাক্বীর পাওয়া যায় তাহা আদায় করিয়া তাহারপর যে–কয়েকটি বাদ পড়িয়াছে, তাহা নিজে একাকী আদায়করিবে। যদি প্রথম রাকাতের অতিরিক্ত তিন তাকবীর বলা শেষ হওয়ার পর জামায়াতে শরীক হয়, তবে নিজে নিয়ত বাঁধারপরক্ষণেই একাকী অতিরিক্ত তিন তাক্বীর বলিয়া তাহারপর চুপ হইয়া কেরাত শুনিবে ।(দোঃ মোখতার)
ঈদের জামাআতে তাকবীর ছুটে গেলে করণীয়
কোন ব্যক্তি ঈদের নামাযে এমন সময়ে শামিল হইল যখন ইমাম প্রথম রাকাতের রুকুতে চলিয়াগিয়াছে, এই অবস্থায় সে ভাবিয়া দেখিবে যে, নিজে প্রথমে তিন তক্ববীর শেষ করিয়া ইমামকে রুকুতে ধরিতে পারিবে কি না ? যদিরুকুতে ইমামের সঙ্গে শামিল হইতে পারিবে বলিয়া দৃঢ় ধারণা হয়, তবে নিজে দাঁড়ান থাকিয়া তিন তাক্বীর বলিয়া তাহারপর‘আল্লাহু আকবার‘ বলিয়া রুকুতে শামিল হইবে।
আর যদি ধারণা হয় যে, অতিরিক্ত তিন তাকবীর বলিতে গেলে ইমাম রুকুহইতে দাঁড়াইয়া যাইবেন, তাহা হইলে সে–ও তাড়াতাড়ি রুকুতে শামিল হইবে এবং রুকুর হালতে থাকিয়া “সুবহানা রাব্বিয়ালআজীম” পড়ার পরিবর্তে তিনবার আল্লাহু আকবার বলিবে । তখন হাত হাঁটুতেই থাকিবে, উপরে উঠাইতে হইবে না। যদি সেরুকুতে যাইয়া দুই–একটি তাক্বীর বলিতে বলিতে ইমাম রুকু হইতে উঠিয়া পড়েন, তবে সেও ইমামের অনুসরণ করিবে। এই ক্ষেত্রেতাহার ছুট্ যাওয়া তাকবীর মাফ‘ হইয়া যাইবে। -(আলমগিরী)
ঈদের জামাআতে এক রাকাআত ছুটে গেলে করণীয়
কোনব্যক্তি ঈদের জামায়াতে ইমামকে দ্বিতীয় রাকয়াতের রুকুতে পাইল । এই অবস্থায় সে উপরোক্ত মাসয়ালা অনুযায়ী তাক্বীর বলিবেএবং ইমামের সাথে রুকু–সেজদা ও বৈঠক করিবে । ইমাম সালাম ফিরাইবার পর
সে দাঁড়াইয়া নিজের ছুট্ যাওয়া প্রথম রাকাত পড়িবে। সেই রাকাতে প্রথমে সূরা–কেরাত পড়িবে, তাহারপর অতিরিক্ত তিন তাবীরবলিয়া রুকুতে যাইবে । যদি কোন ব্যক্তি ঈদের জামায়াতে ইমামের দ্বিতীয় রাকাতের রুকু শেষ হইয়া যাওয়ার পর শামিল হয়, তাহা হইলে ইমামের সালাম ফিরানোর পর সে দাঁড়াইয়া স্বাভাবিক নিয়মে অর্থাৎ প্রথম রাকাতে সূরা–কেরাতের পূর্বে তিন তাক্বীরএবং দ্বিতীয় রাকাতে সূরা– কেরাতের পর তিন তাক্বীর বলিবে। যথারীতি নামায শেষ করিবে । কোন ব্যক্তি ইমামের সঙ্গে ঈদেরনামাযের কিছু অংশ পাইল আর বাকী অংশ নিজে পড়িল । যে অংশ নিজে একাকী পড়িল, তাহাতে কোন ওয়াজিব তরক হইলেতজ্জন্য সহু সেজদা দিতে হইবে। -(আলমগিরী)
কবর যিয়ারত এর উপকারিতা
রাসূলুল্লাহ্ (সঃ) বলেছেন : “তোমরা কোরআনপাঠ দ্বারা তোমাদের মৃত ব্যক্তিগণের কবরকে আলোকিত রাখ।” এতে বুঝা যায় যে, মৃত ব্যক্তির উদ্দেশ্যে কোরআন পাঠ করাতার অন্ধকার কবরের জন্য বাতিস্বরূপ । হাদীস শরীফে আছে।মুরদাকে দাফন করে লোকগণ দূরে আসলেই তাকে কবরে জীবিতকরে দেওয়া হয়, সে কবরে থেকে বাহিরের মানুষের পায়ের শব্দ শুনতে পায়। এজন্যেই রাসূলুল্লাহ্ (সঃ) নিজে বহু কবরস্থানেদাঁড়িয়ে মুরদাদের জন্য দোয়া করেছেন। (মুসলিম) পিতা–মাতার মৃত্যুর পর তাঁদের কবর যিয়ারত করা সন্তানগণের উপর একটিদাবী । জেয়ারতের ফলে মৃত ব্যক্তির আত্মার বিশেষ উপকার হয় এবং যিয়ারতকারীর আধ্যাত্মিক উন্নতি হয়। তদুপরি বেশিবেশি কবর যিয়ারত করলে নিজের মউতের কথাটিও বেশি বেশি স্মরণ হয়।