জামাত ছুটে যাওয়ার আশংকা থাকলে ফজরের সুন্নত পড়বো?

জামাত ছুটে যাওয়ার আশংকা থাকলে ফজরের সুন্নত পড়বো?

ধর্ম

প্রতিদিন পাঁচটি ওয়াক্তে ১৭ রাকাত ফরজ নামাজের পাশাপাশি ১২ রাকাত সুন্নত নামাজ অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ। রাসুল (সা.) নিয়মিত এ নামাজগুলো আদায় করতেন। এগুলোকে সুন্নতে মুআক্কাদা বলা হয়। রাসুল (সা.) বলেছেন,

 

مَنْ صَلَّى اثْنَتَيْ عَشْرَةَ رَكْعَةً فِي يَوْمٍ وَلَيْلَةٍ بُنِيَ لَهُ بِهِنًّ بَيْتٌ فِي الْجَنَّةِ
যে ব্যক্তি প্রতি দিন ও রাতে বারো রাকাত নামাজ আদায় করবে, তার জন্যে জান্নাতে একটি ঘর তৈরি করা হবে। (সহিহ মুসলিম: ৭২৮)

সুনানে তিরমিজির বর্ণনায় বিস্তারিত উল্লিখিত রয়েছে ওই ১২ রাকাত নামাজ কখন কীভাবে আদায় করতে হবে। নবিজি (সা.) বলেছেন,

أَرْبَعًا قَبْلَ الظُّهْرِ وَرَكْعَتَيْنِ بَعْدَهَا وَرَكْعَتَيْنِ بَعْدَ الْمغرب وَرَكْعَتَيْنِ بعد الْعشَاء وَرَكْعَتَيْنِ قبل صَلَاة الْفَجْرِচার রাকাত জোহরের ফরজের আগে, দুই রাকাত জোহরের ফজরের পরে, দুই রাকাত মাগরিবের ফজরের পরে, দুই রাকাত ইশার ফরজের পরে আর দুই রাকাত ফজরের ফরজের আগে আদায় করতে হবে। (সুনানে তিরমিজি: ৪১৫)

এ বারো রাকাতের মধ্যে ফজরের আগের দুই রাকাত নামাজের বিশেষ ফজিলত ও গুরুত্ব আলাদাভাবে বিভিন্ন হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। একটি হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন,

لا تدعوا ركعتي الفجر، وإن طردتكم الخيل.
যদি সৈন্যবাহিনী তোমাদের তাড়া করে, তবুও ফজরের সুন্নত ছেড়ে দিও না। (মুসনাদে আহমদ: ৯২৫৩)
এ কারণে ফজরের জামাত শুরু হয়ে গেলে এবং সুন্নত পড়লে প্রথম রাকাত ছুটে যাওয়ার আশংকা থাকলেও ফজরের দুরাকাত সুন্নত নামাজ পড়ে তারপর জামাতে শরিক হওয়া উচিত। বিশিষ্ট কিছু সাহাবিদের ব্যাপারে বর্ণিত হয়েছে তারা ফজরের জামাত শুরু হয়ে গেলেও ফজরের সুন্নত পড়তেন।

ইমাম তাহাবি (রহ.) তার ‘শরহু মাআনিল আসার’ কিতাবে উল্লেখ করেছেন, আবু দারদা (রা.) ফজরের সময় মসজিদে প্রবেশ করে লোকজনকে ফজরের জামাতে কাতারবদ্ধ পেলেও মসজিদের এক কোণে দাঁড়িয়ে সুন্নত পড়তেন, তারপর জামাতে শরিক হতেন। (শরহু মাআনিল আসার: ১/২৫৬)

তবে যদি সুন্নত পড়লে জামাতের দ্বিতীয় রাকাত বা জামাত ছুটে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে, তাহলে সুন্নত পড়বে না; বরং জামাতে শরিক হয়ে যাবে এবং সূর্যোদয়ের পর কাজা হিসেবে দুরাকাত নামাজ পড়বে।