পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের চমৎকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার পর থেকেই সৌদি আরব বাংলাদেশের বিশ্বস্ত অংশীদার। সৌদি আরবের সঙ্গে শ্রমবাজার কেন্দ্রিক সহযোগিতার পাশাপাশি দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও জোরদার করতে হবে, যা সম্পর্কের মূলভিত্তি হিসেবে কাজ করবে। খবর বাংলানিউজের।
রিয়াদে বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন উপলক্ষে ‘২০৪১ সালে উন্নত বাংলাদেশ গঠন ও বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বাস্তবায়ন’ বিষয়ে আয়োজিত এক ওয়েবিনারে তিনি এ
কথা বলেন। শুক্রবার রিয়াদের এ তথ্য জানায় বাংলাদেশ দূতাবাস। ওয়েবিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা কোন কল্পকাহিনী নয়, ভিশন ২০৪১ হ
লো সোনার বাংলা বাস্তবায়নে দেশকে উন্নয়নের পথে নিয়ে যাওয়ার একটি পরিকল্পনা। যে দেশের অর্থনীতিকে এক সময় ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছিল, আজ সে দেশের অর্থনীতি বিশ্বের কাছে উন্নয়নের বিস্ময় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
সরকারের ভিশন ২০২১ উন্নত বাংলাদেশ গড়ার মূলমন্ত্র হিসেবে গত এক দশকে দেশের উন্নয়নে প্রশংসনীয় অবদান রেখেছে এবং এরই ধারাবাহিকতায় ভিশন ২০৪১ হাতে নেয়া হয়েছে যা আগামী দুই দশকে উন্নত বাংলাদেশ তথা সোনার বাংলা
গড়ায় অবদান রাখবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সোনার বাংলাকে বাংলাদেশের ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হলে আমরা আমাদের সহযোগিতার ভিত্তিকে সহজেই শ্রমবাজার থেকে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্কে রূপান্তর করতে সক্ষম হবো। সৌদি আরব ব্যবসা, অর্থনীতি ও বিনিয়োগের সুযোগ সংস্কার করেছে, যা কাজে লাগিয়ে আমাদের অনেক অভিবাসীরা
সেখানে উদ্যোক্তা হওয়ার সুযোগ নিতে পারেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, বিশ্বের ১৭০টি দেশে বসবাসরত প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ বাংলাদেশী অভিবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স করোনা মহামারীকালীন বাংলাদেশের অর্থনীতিতে
ব্যাপক ভূমিকা রেখেছে। অভিবাসীদের সুবিধার্থে সরকার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, বিপিএম (বার)। রাষ্ট্রদূত বলেন, সৌদি আরবে বাংলাদেশ দূতাবাস বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন উপলক্ষে
এরইমধ্যে বিভিন্ন সভা, সেমিনারসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে যাতে সৌদি আরবে বসবাসরত প্রায় ২৩ লাখ বাংলাদেশী অভিবাসীসহ বিভিন্ন দেশের অভিবাসী ও সৌদি নাগরিকরাও সম্পৃক্ত ছিলেন। সৌদি আরবে বাংলাদেশের শ্রমবাজার বৃদ্ধি, বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বৃদ্ধিতে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ও অর্থনীতিক সম্পর্ক উন্নয়নে প্রচেষ্টা জোরদার করা হয়েছে।
বিশেষ অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী ও পররাষ্ট্র সচিব (সিনিয়র সচিব) মাসুদ বিন মোমেন।
ওয়েবিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. শামসুল আলম। তিনি ২০৪১ সালে বাংলাদেশকে একটি উচ্চ আয়ের দেশে পরিণত করার লক্ষ্যে সরকারের
বিভিন্ন পরিকল্পনা তুলে ধরেন। এছাড়া তিনি বাংলাদেশ সম্পর্কে বিভিন্ন বিখ্যাত অর্থনীতিবিদ ও আন্তর্জাতিক মিডিয়ার ইতিবাচক রিপোর্ট তুলে ধরেন। প্যানেল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের
নির্বাহী চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম, সরকারী-বেসরকারী অংশীদারিত্ব কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতানা আফরোজ ও সৌদি ব্যবসায়ী ও বাংলাদেশে বিনিয়োগকারী মোহাম্মদ এন হিজ্জি। ওয়েবিনার পরিচালনা
করেন দূতাবাসের মিশন উপ-প্রধান এস এম আনিসুল হক। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত ও কর্মকর্তারা যোগ দেন। এছাড়া রিয়াদে বসবাসরত বাংলাদেশী অভিবাসীরা ও অনুষ্ঠানে যোগ দেন।