সিলেট-৩ আসনের উপ-নির্বাচনে প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এদিকে প্রতীক পেয়েই প্রচারণায় নেমেছেন প্রার্থীরা।শুক্রবার (২৫ জুন) দুপুরে নির্বাচন কমিশনের সিলেট আঞ্চলিক কার্যালয়ে চার প্রার্থীকে প্রতীক দেন সিলেটের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং অফিসার মো. ইসরাইল হোসেন।
সিলেটের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. ইসরাইল হোসেন বলেন, ‘সিলেট-৩ আসনের উপ-নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দ সম্পন্ন হয়েছে। এবারের নির্বাচনে চার প্রার্থী অংশ নিচ্ছেন।’
দলীয় প্রার্থী হওয়ায় আওয়ামী লীগের হাবিবুর রহমান হাবিব নৌকা ও জাতীয় পার্টির আতিকুর রহমান আতিক লাঙল প্রতীক পেয়েছেন। এছাড়া এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন শফি আহমদ চৌধুরী ও জুনেদ মুহাম্মদ মিয়া।
এদের মধ্যে সিলেট-৩ আসনে দুইবারের সাবেক সংসদ সদস্য, বিএনপির সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা শফি আহমদ চৌধুরী কোন প্রতীক পাবেন এ নিয়ে আগ্রহ ছিল সবার। শফি পেয়েছেন মোটরগাড়ি (কার) প্রতীক। অপর প্রার্থী বাংলাদেশ কংগ্রেসের জুনেদ মোহাম্মদ মিয়া পেয়েছেন ডাব প্রতীক।
স্থানীয়রা জানান, মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে নৌকা-মোটরগাড়ি আর লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থীর মধ্যে। এ তিন প্রার্থীরই নিজ নিজ ভোট ব্যাংক রয়েছে। এদিকে ডাব প্রতীকের প্রার্থী জুনেদ মোহাম্মদ মিয়াকে ভোটারদের অনেকেই এখনো চিনেন না।
প্রতীক বরাদ্দের পর সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ফয়সল কাদের প্রার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘সিলেট-৩ আসনের উপ-নির্বাচনটি সুষ্ঠু হওয়ার জন্য সবাইকে
সহযোগিতা করতে হবে। প্রার্থীরা এমন কিছু করবেন না, যাতে নির্বাচন কমিশনকে আপনাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হয়। নির্বাচনের দিন পর্যন্ত প্রয়োজনে আপনাদের প্রার্থিতা বাতিলের ক্ষমতা রাখে কমিশন।’
প্রার্থীদের নির্বাচন কমিশনের বিধিনিষেধের কথা মনে করিয়ে ফয়সল কাদের বলেন, ‘আজ থেকে আপনারা আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করতে পারলেও বেশ কয়েকটি বিধিনিষেধ রয়েছে। সেগুলো হচ্ছে, প্যান্ডাল তৈরি করে অনুষ্ঠান, ৪০০ বর্গফুটের অধিক জায়গাজুড়ে অনুষ্ঠান, নির্বাচনী প্রচারণামূলক তোরণ (গেট) তৈরি ও আলোকসজ্জা করা যাবে না। এছাড়া রয়েছে আরও কিছু বিধিনিষেধ। সবাইকে এগুলো মেনে চলতে হবে।’
কোনো প্রার্থী বা তার পক্ষের কোনো ব্যক্তি নিয়মভঙ্গ করলে সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। দলের ক্ষেত্রেও এ শাস্তি প্রযোজ্য হবে বলে জানান এ নির্বাচন কর্মকর্তা।
গত ১৫ জুন মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষদিন সিলেট-৩ আসনে উপ-নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে একজন নারীসহ মোট ছয়জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। পরে মনোনয়নপত্র বাছাইয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী ফাহমিদা হোসেন ও শেখ জাহিদুর রহমান মাসুমের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।
প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষদিন বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) শেষসময় পর্যন্ত বৈধ চার প্রার্থীর কেউ প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। ফলে তারা সবাই আছেন নির্বাচনী লড়াইয়ে। প্রতীক পাওয়ার পর তারা পুরোদমে শুরু করেছেন প্রচার-প্রচারণা।
প্রসঙ্গত, গত ১১ মার্চ করোনায় আক্রান্ত হয়ে সিলেট-৩ (দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জের একাংশ) আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী মা’রা যান।
তার মৃত্যুতে শূন্য হওয়া আসনে আগামী ২৮ জুলাই এ আসনে প্রথমবারের মতো ইভিএমে ভোটগ্রহণ করা হবে। এ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৫২ হাজার। এ আসনে কেন্দ্র রয়েছে ১৪৯টি।