ওজন কমানোর 10টি কার্যকর টিপস :
নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর খাবার খান: ওজন কমাতে গিয়ে যাঁরা গোড়াতেই সিদ্ধান্ত নেন যে খাওয়া কমাতে হবে এবং উপোস করতে আরম্ভ করেন, তাঁরাই সবচেয়ে বড়ো ভুলটা করেন এবং সাধারণত তাঁদের ওজন মোটেই কমে না৷ সামান্য কমলেও কিছুদিন পরেই আবার ফিরে আসে৷ ফলে হতোদ্যম হয়ে তাঁরা নিয়ম মেনে চলাই বন্ধ করে দেন৷ মেটাবলিজ়মের হার বাড়ানোর সবচেয়ে ভালো রাস্তা হচ্ছে প্রতি দু’ ঘণ্টা অন্তর কিছু খাওয়া৷ খিদে পাওয়ার আগেই খাচ্ছেন বলে অতিরিক্ত খাবার শরীরই নিতে পারবে না৷
জল খাওয়ার পরিমাণ ও সময় নির্দিষ্ট করুন: প্রতি দু’ ঘণ্টা অন্তর খাবার খাওয়ার পাশাপাশি জল খাওয়ারও একটা রুটিন থাকা উচিত৷ খাবার খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জল খাবেন না৷ অন্তত আধ ঘণ্টা আগে বা পরে জল খান৷ আপনার ওজন 60 কেজি হলে দিনে অন্ততপক্ষে সাড়ে চার লিটার জল খেতে হবে৷ যাঁরা খুব বেশি ঘামেন, তাঁদের আরও একটু বেশি জল খাওয়া প্রয়োজন৷
সুষম খাদ্যতালিকা মেনে চলুন: বাঙালিদের সনাতন খাদ্যতালিকায় যা যা থাকে, তার প্রতিটিই আমাদের শরীরের কোনও না কোনও প্রয়োজনে লাগে৷ পৃথিবীর প্রতিটি ভৌগোলিক অঞ্চলের বাসিন্দাদের ক্ষেত্রেই কথাটা একইরকম সত্যি৷ ভাত বাদ দিয়ে কিনওয়া বা ওটস খেতে আরম্ভ করলে শরীর প্রাথমিক একটা ধাক্কা খাবে, তার ফলে খানিক ওজন কমবে ঠিকই, কিন্তু এই ডায়েটে সারা জীবন চালানো কঠিন৷ তার চেয়ে রোজের খাবারই খান, কিন্তু স্বাস্থ্যকর অপশনগুলি বাছুন৷ মাছের কালিয়া মাসে একবার চলতে পারে, রোজের জন্য সবজি দিয়ে হালকা ঝোল রাঁধুন৷
বাড়িতে কী রান্না হচ্ছে, সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখুন: নিজের রান্না নিজে করতে পারলে সবচেয়ে ভালো, কিন্তু সেটা তো সব সময়ে সম্ভব হয় না, তাই কী রান্না হবে সে সিদ্ধান্তটা অন্তত নিন৷ বাজার থেকে তাজা শাক-সবজি-ফল কিনে আনুন, সেটা ভালো করে ধুয়ে নিন৷ পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেটের জলে স্যালাডের আনাজপত্র ভিজিয়ে রেখে ধোওয়া ভালো৷ খুব বেশি তেলমশলা যেন না থাকে রান্নায়, সেটাও দেখতে হবে৷
জলখাবার বাদ দেবেন না কখনওই: সকালের জলখাবার খান পেট ভরে, দুপুরে নিয়ন্ত্রিত মধ্যাহ্নভোজ, আর রাতে সামান্য ডিনার খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়৷ মাঝে খিদে পেলে খাওয়ার জন্য ফল, ছোলা সেদ্ধ, ডিম সেদ্ধ, বাদাম রাখুন হাতের কাছে৷
ভাজাভুজি বাদ দিন খাদ্যতালিকা থেকে: বাড়িতেই হোক বা বাড়ির বাইরে, ভাজাভুজি থেকে দূরে থাকতে হবে৷ প্যাকেটজাত চিপস, চানাচুর, ঝুরিভাজা যেমন চলবে না, তেমনই লুচি-পরোটা-ব্রেড পকোড়াও নিষিদ্ধ৷ কারও জন্মদিনের অনুষ্ঠানে এক টুকরো কেক খেলে সমস্যা নেই, কিন্তু তা ছাড়া কেক-পেস্ট্রি থেকে দূরে থাকুন৷ মাঝে-মধ্যে এক আধদিন এক টুকরো মিষ্টি চলতে পারে, তা রোজ খাবেন না৷
কোনও না কোনও শারীরিক শ্রমের সঙ্গে যুক্ত থাকুন: যাঁরা আলাদা করে ব্যায়াম করার সময় পান না, তাঁরা বাড়িতেই রোজ এমন কোনও কাজ করুন যাতে কিছু ক্যালোরি খরচ হয়৷ ঘর মোছা-ঝাঁট দেওয়া, ডাস্টিং করা, বাজার করা, সবজি কাটা, মশলা বাটা, রান্না করাও যথেষ্ট পরিশ্রমসাধ্য কাজ৷ বাড়ি বা অফিস পর্যন্ত অ্যাপ ক্যাব না ডেকে হেঁটে বাস স্ট্যান্ড পর্যন্ত যান৷ কথায় কথায় অটো বা রিকশা চড়বেন না৷ এর বাইরে দিনে অন্তত আধ ঘণ্টা হাঁটতে পারলে তো কথাই নেই!
রাতারাতি ফলের আশা করবেন না: যে ওজনটা পাঁচ বছর ধরে একটু একটু করে বেড়েছে, সেটা রাতারাতি কমে যাবে, এমন আশা করবেন না৷ তুরন্ত ফল না পেলে মুষড়ে পড়ারও কারণ নেই৷ শরীরকে সময় দিন৷
দিনে আট ঘণ্টা ঘুম আবশ্যক: তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়া আর তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে ওঠার অভ্যেস রাখলে দেখবেন, দিনটাও অনেক লম্বা লাগছে এবং অনেক বেশি কাজ করার সুযোগ পাচ্ছেন৷
খাবার ধীরে-সুস্থে চিবিয়ে খান: খাবার খাওয়ার সময় মোটেই তাড়াহুড়ো করবেন না, একেবারে ধীর গতিতে চিবিয়ে খান৷ তাতে হজম ভালো হয়, পেট পরিষ্কার থাকে৷