বিয়ে-বিদেশ-চাকরি, নিষ্ক্রিয় সখীপুর ছাত্রলীগের কমিটি

ঢাকা দেশ জুড়ে বাংলাদেশ রাজনীতি

দুই বছরেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে পারেনি টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলা ছাত্রলীগ। ফলে ছয় সদস্যের কমিটি দিয়েই কোনোরকম চলছে কমিটি। তবে দলীয় কার্যক্রমে সক্রিয় নন সেই ছয়জনের কয়েকজন।

 

২০১৯ সালের ২৪ মার্চ তৎকালীন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী স্বাক্ষরিত পত্রে এক বছর মেয়াদী উপজেলা ছাত্রলীগ কমিটি ঘোষণা করা হয়।

 

পত্রে উল্লেখ করা হয়, শর্ত ভঙ্গ করলে ওই কমিটি বাতিল বলে গণ্য হবে। ওই পত্রে শরীফুল ইসলাম শরীফ সভাপতি ও রাসেল আল মামুনকে সাধারণ সম্পাদক করে ছয় সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়। আগামী ৩০ দিবসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার শর্ত দেয়া হয়। কিন্তু দুই বছরের অধিক সময় পার হলেও টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলা ছাত্রলীগ তাদের কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে পারেনি।

 

এছাড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সঙ্গে জেলা ছাত্রলীগ, উপজেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও স্থানীয় সংসদ সদস্যের সঙ্গে সাংগঠনিক যোগাযোগ না থাকায় ওই কমিটি অকার্যকর হয়ে পড়েছে।
কমিটির ছয় সদস্য হলেন- সভাপতি শরীফুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক রাসেল আল মামুন, সহসভাপতি-১ আল মাহমুদ প্রান্ত, সহসভাপতি-২ আব্দুল রউফ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জামিল মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান হোসেন।

 

এদের মধ্যে সভাপতি শরীফুল ইসলামের গোপন বিয়ে ও পরে বিচ্ছেদের বিষয়টি ফাঁস হয়ে যাওয়ায় উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম সম্পূর্ণ নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় অকার্যকর কমিটিকে আনুষ্ঠানিক বাতিল ঘোষণা করে নতুন কমিটি গঠনের মাধ্যমে উপজেলা ছাত্রলীগকে সক্রিয় ও গতিশীল করার দাবি জানিয়েছেন মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।

 

উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি আল মাহমুদ প্রান্ত বলেন, ‘গত দুবছরে কমিটির একটি সভাও হয়নি। শরীফুল ইসলাম শরীফ সভাপতি হওয়ার পর ২০২০ সালের ১৯ জানুয়ারি রেজিস্ট্রিমূলে গোপনে বিয়ে করেন। নিয়ম অনুযায়ী বিয়ের অপরাধে তিনি অনেক আগেই বাদ পড়েছেন। এছাড়া যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জামিল মাহমুদ সরকারি চাকরি করছেন ও সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান হোসেন কোভিড-১৯ এর আগেই বিদেশে পাড়ি জমান। ফলে নীতিগতভাবে কমিটি এখন বিলুপ্ত।’

 

সরকারি মুজিব কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি খন্দকার রকিবুল হাসান বিজয় বলেন, ‘উপজেলা ছাত্রলীগ ছয় সদস্য থেকে কমে গিয়ে তিন সদস্য হয়েছে। আইনত সখীপুর ‘উপজেলা ছাত্রলীগ’ বলতে কিছুই নেই। তাই আমরা ছাত্রলীগকে গতিশীল ও কার্যকরী করতে নতুন কমিটি চাই। যাদের নেতৃত্বে উপজেলা ছাত্রলীগ সক্রিয় ও গতিশীল হবে।’

এ বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক রনি আহমেদ বলেন, ‘ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করে কোনো সম্মেলন ছাড়াই কেন্দ্রীয় কমিটির সঙ্গে আঁতাত করে ছয় সদস্যের একটি কমিটি অনুমোদন আনেন। কেন্দ্রীয় কমিটির শর্তানুযায়ী ওই কমিটি বাতিল বলে গণ্য হয়েছে। সেই শর্ত মোতাবেক সখীপুর উপজেলা ছাত্রলীগের কোনো কমিটি নেই। শিগগিরই সখীপুর উপজেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হবে।’
গোপনে বিয়ে করা ও সম্প্রতি বিচ্ছেদের বিষয়ে প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শরিফুল ইসলাম শরিফ বলেন, ‘উপজেলা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি করে অনেক আগেই বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে জমা দেয়া হয়েছে। করোনা পরিস্থিতির কারণে ওই কমিটি এখনো পাশ হয়নি।’

 

 

জেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান সোহেল বলেন, ‘সভাপতির বিয়ের বিষয়টি আমিও শুনেছি। যেহেতু কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ ওই উপজেলা কমিটি দিয়েছে, সে জন্য এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় কমিটিই দিবে।’