প্রবাসী বন্ধুরা শিক্ষা নিন, রাশেদকে নিতে চাচ্ছেনা পরিবার , বিশেষ ফ্লাইটে দেশে আনল দূতাবাস !

আন্তর্জাতিক প্রবাস

এটা কোন ধরনের অমানবিকতা। এদের মতো মানুষ নামের অ;মানুষ গুলারে দেখতে মন চাচ্ছে।

 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কেবিন ক্রু তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কেবিন ক্রু হিসেবে এবং একজন ফ্রন্টলাইনার হিসাবে হাজারাে তিক্ত, সুন্দর, বেদনাদায়ক নিত্যনতুন অভিজ্ঞতার শেষ নেই।

আমি আজকের মাস্কাট ফ্লাইটের একটা অভিজ্ঞতা শেয়ার করবাে। মানবিক কারণেই আমি উনার ঘটনা শুনে খুবই আপসেট।
সারাদিন মাথায় বিষয়টা ঘুরপাক খাচ্ছে।

মাস্কাটে তিন বছর আগে বিল্ডিং রং করতে গিয়ে উঁচু বিল্ডিং থেকে পড়ে পুরো শরীর এমনই ফ্র্যাকচারড হয়েছে যে জানে বেঁচে গিয়েছে। কিন্তু প্যারালাইজড ।

শুধুমাত্র মাঝে মাঝে চোখ’টা খুলে নির্বিকার তাকিয়ে থাকে। আবার চোখ বন্ধ করে।কথা বন্ধ।
ছেলেটি এভাবেই তিন বছর ধরে মাস্কাটে হসপিটালে চিকিৎসাধীন অবস্হায় পড়ে ছিলো।

সে কোম্পানিতে কাজ করতো, তারা খরচ বহন করেছে।উনাকে ফেলে দেয়নি।
কিন্তু দুঃখজনক ব্যপার হলো উনার পরিবা’রের সাথে তার কোম্পানি থেকে ক’য়েকবার যোগাযোগ করেও তারা তাকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতে ব্যর্থ হয়েছে।

পঙ্গু ছেলে তারা ফিরিয়ে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।

তার ভার তারা নেবেনা।তাকে যেন দেশে পাঠানো না হয়।
ধরে নিলাম তারা দরিদ্র।দায়িত্ব নিতে চায়না। তারপরেও তাদের এই সন্তান যদি সুস্হ থাকতো, কাঁড়ি কাঁড়ি রিয়াল পাঠাতো, তাহলে কিন্তু এরাই তাকে পুজা করতো, মাথায় তুলে রাখতো।বিষয়টা আমার কাছে অত্যন্ত অমানবিক মনে হয়েছে।

আহারে জীবন। রাশেদ যে হসপিটালে চিকিৎসাধীন ছিলেন সেই হসপিটালের বাংলাদেশি ডক্টররা, ওমানে বাংলাদেশ দূতাবাস, যে কোম্পানিতে কর্মরত ছিলেন এবং বাংলাদেশ সরকারের সহায়তায় তাকে আজকে দেশে আনা হয়েছে।
সরাসরি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

প্রবাসী রাশেদকে গত ২৪ তারিখ দিবাগত রাতের বি’মান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে বিশেষ ব্যবস্থায় দেশে আনা হয়েছে।
সেই বিমান যাকে আপনারা বেঈমান বলেন।

মাস্কাট-ঢাকা ফ্লাইটে তাকে স্পেশাল হ্যান্ডলিং এর মাধ্যমে আনা হয়েছে।প্রবাসী বন্ধুরা, এটা দেখে শিক্ষা নিন, নিজের জন্য কিছু করুন।

বি’পদে কেউ কারো না।

তবে রাশেদের বোন রোকসানা রুকু সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার ভাইয়ের যখনি অসুস্থ হওয়ার খবর পেয়েছি তখনি আমরা তার খোঁজ খবর নিয়েছি। ভাইয়ের বেশ কয়েকজন বন্ধু আছে তারা সবসময় দেখাশোনা করেছে। মাস্কাট থেকে আমাদের সাথে যোগাযোগ করা হলে আমরা বলেছিলাম আমাদের আর্থিক অবস্থা অনেক খারাপ। আমার ভাইকে একটু সুস্থ করে দেশে পাঠিয়ে দেন।

তারপর করোনা আসার কারণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। আমার ভাইকে নিয়ে অনেকে অনেক ধরনের পোস্ট দিয়েছে যা দেখে আমরা অনেক কষ্ট পেয়েছি। আমাদের চার বোনের একমাত্র ভাই। আমরা কীভাবে এ কথাগুলো বলতে পারি?
তিনি বলেন, আমার ভাইকে এখন নিউরো সাইন্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আমরা জেনেছি আমার ভাইয়ের চিকিৎসার সব খরচ সরকার বহন করবে কিন্তু এখানে এসে তেমন কিছুই দেখতে পাচ্ছি না। ডাক্তার যখন যা লিখছে আমরা বাহিরে থেকে তাই কিনে আনছি।

রোগীর চিকিৎসা করতে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা খরচ হবে বলে জানিয়েছে ডাক্তাররা। কিন্তু আমরা এত টাকা কীভাবে জোগাড় করবো। আমাদের একটি জমি বিক্রি করার কথা চলছে। কিন্তু সেই জমি বিক্রির টাকা ২ থেকে ৩ লাখ টাকার বেশি হবে না।