হারিয়ে যাওয়া মাকে ১৯ বছর পর ফিরে পেলেন সন্তান

দেশ জুড়ে নারী ও শিশু বরিশাল

নিউজ ডেস্ক: দীর্ঘ ১৯ বছর পরে বরগুনা শহরের পত্রিকা বিক্রেতা সোলায়মান (সোহেল) ফিরে পেয়েছেন তার হারিয়ে যাওয়া মা আমেনা বেগমকে (৫০)। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পটুয়াখালীর মৃজাগঞ্জ উপজেলার সুবিধখালী ইউনিয়নের দক্ষিণ আমড়াগাছি গ্রামে মামাতো বোনের শ্বশুর বাড়িতে মা ও ছেলের দেখা হয়।

জানা যায়, বরগুনার গণমাধ্যমকর্মী জাহাঙ্গীর মৃধা ২ সপ্তাহ আগে হকার সোলায়মান খুঁজছে হারিয়ে যাওয়া মাকে- শিরোনামে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্ট দেন। এই পোস্টের সূত্র ধরেই কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মীর সহযোগিতায় সন্ধান পাওয়া যায় ১৯ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া আমেনা বেগমের।

সোলায়মানের বয়স যখন ৭, তখন বাবা বেল্লালের সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ হয় মা আমেনার। চট্টগ্রাম থেকে ৭ বছরের সোলায়মানকে নিয়ে বরগুনার বেতাগীতে বাবার বাড়ির উদ্দেশ্য রওনা দেন আমেনা বেগম। ট্রেনে চাঁদপুর এসে মা ও ছেলে হারিয়ে যায়। ছেলেকে হারিয়ে কোথায়ও খুঁজে না পেয়ে পথে পথে ঘুরতে থাকেন তিনি। আত্মীয়স্বজনদের বাড়ি বাড়ি ঘুরে ছেলের খোঁজে অনেকটা মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন আমেনা।

এদিকে, শিশু সোলায়মানকে চাঁদপুর লঞ্চ ঘাটে কাদঁতে দেখেন বরগুনার গগন স্কুল সড়কের আলম মোল্লা ও হামিদা বেগম দম্পতি। পরে তারা সোলায়মানকে বরগুনা এনে সরকারি শিশু পরিবারে ভর্তি করে দেন। সেখান থেকে সোলায়মান কারিগরি শিক্ষায় উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন। আলম মোল্লা আর হামিদা বেগমের পরিবারেই আশ্রয় হয় তার। পেশা হিসেবে বেছে নেন সংবাদপত্র বিক্রি।

সাংবাদিক জাহাঙ্গীর মৃধা বলেন, সোলায়মানের ব্যক্তিগত খোঁজ নিতে গিয়েই জানতে পারি মা-ছেলে হারিয়ে যাওয়ার কাহিনি। আমরা খুবই আনন্দিত। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি ১৯ বছর পরে হলেও মা ও সন্তান একত্র হয়েছেন।

আমেনা বেগম আবেগময় কন্ঠে বলেন, ‘আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আমার পোলারে ফিরাইয়া দিছেন।’ আর ছেলে সোলায়মান বলেন, ‘কি বলমু আল্লাহ মায়রে ফিরাইয়া দিছে। সাংবাদিকদের জন্যই ১৯ বছর পর মায়রে পাইছি