অ’পহ’রণের নাটক সাজিয়ে টাকা আত্মসাৎ, দোকান কর্মচারী গ্রে’ফতার

দুর্নীতি দেশ জুড়ে

অটোমেটেড টেলার মেশিন (এটিএম) বুথ থেকে দোকান মালিকের ১২ লাখ টাকা উত্তোলন করে বাসায় ফেরার পথে অ’পহ’রণের নাটক সাজিয়ে আত্মসাতের অভিযোগে সুদীপ্ত সাহা ওরফে টিংকু (৩৫) নামে এক কর্মচারীকে গ্রে’ফতার করেছে পুলিশ।

 

 

শুক্রবার (৯ জুলাই) দিবাগত রাতে চট্টগ্রাম নগরের ডবলমুরিং থানা পুলিশ বান্দরবান জেলায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রে’ফতার করে। এ সময় তার কাছ থেকে আত্মসাতের ১১ লাখ ৯৯ হাজার টাকা জব্দ করা হয়। সুদীপ্ত সাহা রাঙ্গুনিয়া উপজেলার মহাজন বাড়ির বাসিন্দা অসীম সাহার ছেলে বলে জানা গেছে।

 

 

পুলিশ জানায়, শুক্রবার বিকেলে আগ্রাবাদের আখতারুজ্জামান সেন্টারের দি সন্দ্বীপ জুয়েলার্সের মালিক প্রদীপ বণিক ডবলমুরিং থানায় অভিযোগ করেন- এটিএম বুথ থেকে টাকা উত্তোলন করে বাসায় ফেরার পথে তার দোকান কর্মচারী সুদীপ্ত সাহাকে ১২ লাখ টাকাসহ অ’পহ’রণ করে একদল দুর্বৃত্ত। অ’পহর’ণকারীরা সুদীপ্ত সাহাকে একটি মাইক্রোবাস দিয়ে বান্দরবান এলাকায় নামিয়ে দেয়।

 

 

 

অভিযোগ পেয়েই তদন্তে নামে পুলিশের একাধিক টিম। প্রথমে পুলিশের একটি টিম বান্দরবান থেকে সুদীপ্ত সাহাকে উদ্ধার করে থানায় আনে। একই সঙ্গে এটিএম বুথ ও আশপাশের এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়। কিন্তু সুদীপ্ত সাহাকে এটিএম বুথ থেকে মাইক্রোবাস দিয়ে অপ’হর’ণ করা হয়েছে বলা হলেও সিসিটিভির ফুটেজে তার সত্যতা পাওয়া যায়নি। এছাড়াও ঘটনা সম্পর্কে সুদীপ্ত সাহার বক্তব্য সন্দেহজনক হওয়ায় তাকে লাগাতার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

 

জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে সুদীপ্ত সাহা স্বীকার করেন, অ’পহ’রণের নাটক সাজিয়ে তিনি নিজেই টাকাগুলো আত্মসাৎ করেছেন। ঘটনা সবার কাছে বিশ্বাসযোগ্য করার জন্য এবং পুলিশের কাছেও কল লোকেশন যেন বান্দরবান আসে সেজন্য নিজেই সেখানে চলে যায়। এরপর তার দেয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী কোতোয়ালি থানার পাথরঘাটা এলাকায় তার বোনের বাসা থেকে ১১ লাখ ৯৯ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।

 

ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘সুদীপ্ত সাহা প্রদীপ বণিকের বিশ্বস্ত কর্মচারী। চাকরি করছেন দুই বছর ধরে। প্রদীপের এটিএম কার্ডের সব পিনই সুদীপ্তের জানা। ঘটনার আগের দিন (বৃহস্পতিবার) রাতেই প্রদীপ তার চারটি এটিএম কার্ড সুদীপ্তকে দিয়ে দেন। সুদীপ্ত শুক্রবার সকালে টাকা তুলে মালিকের বাসায় ফেরার কথা থাকলেও নির্দিষ্ট সময় না আসায় তাকে ফোন দেয়া হয়।

কিন্তু তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। কিছুক্ষণ পর সুদীপ্ত নিজেই মালিককে ফোন করে বলেন, টাকাগুলোসহ একদল অপ’হরণকারী তাকে অপ’হরণ করে বান্দরবানে হাত-পা বেঁধে ফেলে দেয়। এরপর প্রদীপের

 

অভিযোগ পেয়েই সুদীপ্তকে বান্দরবান থেকে উদ্ধার করে থানায় আনা হয়। কিন্তু পুলিশের সন্দেহ হলে ঘটনা সম্পর্কে সুদীপ্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এতে সুদীপ্ত স্বীকার করে তিনি নিজেই নাটক করে এসব টাকা আত্মসাৎ করেছেন।’

 

ওসি আরও বলেন, ‘সুদীপ্তের স্বীকারোক্তিতে আত্মসাৎ হওয়া টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় প্রদীপ বণিক বাদী হয়ে সুদীপ্ত সাহাকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় গ্রেফ’তার দেখিয়ে আজ (শনিবার) সুদীপ্ত সাহাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।’