বৃদ্ধকে টি’কা পুশ করে সমালোচনার মুখে এমপি এনামুল

জাতীয় বিশেষ প্রতিবেদন রাজনীতি

রাজশাহী জেলার ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডভিত্তিক গণটি’কাদান কার্যক্রমের উদ্বোধনীতে নিজে এক বৃদ্ধকে করোনার টি’কা পুশ করে চরম সমালোচনার মুখে পড়েছেন রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক। এ সংক্রান্ত ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। শনিবার (৭ আগস্ট) দুপুরের দিকে উপজেলার মাড়িয়া ইউনিয়নের সালেহা-ইমারত মেডিকেল সেন্টার টিকাদান কেন্দ্রে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন এমপি এনামুল হক।

উপজেলা সূত্রে জানা গেছে, বৃদ্ধের শরীরে করোনার টি’কা পুশ করার পর সেখানে থাকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইপিআই টেকনিশিয়ান টি’কাকেন্দ্রে আসা অন্যদের শরীরে টি’কা পুশ করেন। সালেহা-ইমারত মেডিকেল সেন্টার টি’কাদান কেন্দ্রে মোট ৬০০ জনকে টি’কা দেয়া হয়েছে। টি’কা পুশ করে টি’কাদান কর্মসূচির উদ্বোধনের ছবি ও ভিডিও বিকেলে এমপি তার ফেসবুকে পোস্ট দেন। তবে প্রশিক্ষণ ছাড়া একজন জনপ্রতিনিধির টি’কা পুশ করার ঘটনায় অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন।

সূত্র জানায়, গণটি’কাদানের সময় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা গোলাম রাব্বানী ছাড়াও সেখানে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অনিল কুমার সরকার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শরিফ আহম্মেদ, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাজিবুর রহমান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ গোলাম সারওয়ার, মাড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আসলাম আলী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হকের করোনা টি’কা পুশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাগমারা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা গোলাম রাব্বানী। তার দাবি, এটা দোষের কিছু নয়। গণমাধ্যমকে তিনি জানান, চিকিৎসক ও টেকনিশিয়ান এমপির পাশে থেকে তাকে নির্দেশনা দেন। তাছাড়া টি’কাগ্রহণকারী ওই ব্যক্তির কোনো শারীরিক সমস্যা হয়নি, তিনি ভালো আছেন।

এ বিষয়ে জানতে রাজশাহী সিভিল সার্জন ডা. মো. কাইয়ুম তালুকদারের মোবাইলে একাধিকবার কল দেয়া হয়। তবে তিনি কল রিসিভ করেননি। তবে এ বিষয়ে কথা হয় রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য দফতরের পরিচালক ডা. হাবিবুল আহসান তালুকদারের সঙ্গে। তিনি এমপির টিকা পুশ করার ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, প্রশিক্ষিত চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী ছাড়া টিকা পুশ করা ঠিক না। তিনি যদি দিয়েও থাকেন তবে সেটি ঠিক করেননি।

একজন সচেতন ব্যক্তি হিসেবে এমপির এমন কাজ করা উচিত হয়নি। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা গোলাম রাব্বানী বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। এ ঘটনায় কারো অবহেলা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে এমপি এনামুল হকের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।