পতনের বাজারেও দাপট ধরে রাখল বীমা

পতনের বাজারেও দাপট ধরে রাখল বীমা

অর্থনীতি দেশ জুড়ে বাংলাদেশ

দেশের শেয়ারবাজারে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে দরপতন হয়েছে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবকটি মূল্য সূচক কমার পাশাপাশি কমেছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম। সেই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ।

 

এই পতনের বাজারেও দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখিয়েছে বীমা খাত। এর মাধ্যমে চলতি সপ্তাহজুড়েই শেয়ারবাজারে দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখালো বীমা কোম্পানিগুলো। অপরদিকে একদিন দাম বাড়ার পর টানা তিনদিন কমেছে বেশিরভাগ ব্যাংকের শেয়ার দাম।

 

দীর্ঘদিন অবহেলিত থাকার পর গত মঙ্গলবার দেশের শেয়ারবাজারে বেশ ঝলকানি দেখায় ব্যাংকখাত। তালিকাভুক্ত ৩১টি ব্যাংকের মধ্যে ৩০টির শেয়ার দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখায়। এতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখীর দেখা মিলে। তবে একদিনের ব্যবধানে বুধবার ফের ব্যাংকের শেয়ারের দরপতন হলো। মাত্র চারটি ব্যাংকের শেয়ার দাম বাড়ার বিপরীতে ২৭টির দাম কমে যায়।

 

 

বুধবারের ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবারও দরপতনের তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশিরভাগ ব্যাংক। এদিন শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হতেই একের পর এক ব্যাংকের শেয়ার দাম কমতে থাকে। যা লেনদেনের শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। ফলে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসই মাত্র ৫টি ব্যাংক দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। বিপরীতে শেয়ারের দাম কমেছে ২৪টির।

 

ব্যাংক কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দরপতনের মধ্যে আগের দু’দিনের মতো দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখিয়েছে বীমা কোম্পানিগুলো। এমনকি আগের দিনের তুলনায় আজ দাম বাড়ার তালিকায় আরও বেশি বীমা কোম্পানি স্থান করে নিয়েছে। বুধবার ৩৫টি বীমা কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার বিপরীতে দাম কমে ১৪টির। আর বৃহস্পতিবার লেনদেন শেষে ৪৬টি বীমা কোম্পানি শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে মাত্র ৫টির।

 

দাম বাড়ার ক্ষেত্রে বীমা খাতের কোম্পানিগুলো এমন দাপট দেখালেও সার্বিক শেয়ারবাজার ছিল পতনের ধারায়। ফলে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ১৫৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৯১টির। আর ২৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

 

এতে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১১ পয়েন্ট কমে ছয় হাজার ৭৬০ পয়েন্টে নেমে গেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক তিন পয়েন্ট কমে দুই হাজার ৪২৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক চার পয়েন্ট কমে এক হাজার ৪৬১ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

 

দরপতনের দিনে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে দুই হাজার ২১৮ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় দুই হাজার ৪৬৫ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন কমেছে ২৪৬ কোটি ৬৫ লাখ টাকা।

 

টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ১৫৫ কোটি ৬২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ ৭৯ কোটি নয় লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৭৪ কোটি ৬৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে লংকাবাংলা ফাইন্যান্স।

 

এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- আইএফআইসি ব্যাংক, সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, ওরিয়ন ফার্মা, জিবিবি পাওয়ার, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, ম্যাকসন স্পিনিং এবং জেনেক্স ইনফোসিস।

 

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্য সূচক সিএএসপিআই কমেছে ৩৯ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৮৮ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেয়া ৩২১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১২৪টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৭১টির এবং ২৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।