মঙ্গলমাঝির ফেরিঘাট

আপাতত চালু হচ্ছে না মঙ্গলমাঝির ফেরিঘাট

বাংলাদেশ

পদ্মা সেতু এড়িয়ে পারাপারে বাংলাবাজার ফেরিঘাটের পরিবর্তে শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার সাত্তার মাদবরের মঙ্গলমাঝির ঘাট আপাতত চালু হচ্ছে না। শুক্রবার (২৭ আগস্ট) থেকে এই ঘাট চালু করার কথা থাকলেও নাব্যতা সংকটের কারণে তা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) কর্মকর্তারা।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. তাজুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘মাঝির ঘাট কবে থেকে চালু হবে এটা বলা যাচ্ছে না। এই রুটে নদীতে চর দেখা দিয়েছে, ফেরি যেদিক দিয়ে যাবে সেখানে মাত্র ৬ ফুট পানি। ওটা ড্রেজিং করতে হবে। ড্রেজিংয়ের কাজ করবে বিআইডব্লিউটিএ (বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল কর্তৃপক্ষ)। তারা বলেছেন, ড্রেজিং করতে কিছু সময় লাগবে। তাই আপাতত মাঝির ঘাটটি চালু হচ্ছে না।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের ফেরি রেডি, বিআইডব্লিউটিএ যখনই আমাদের নৌপথ চলাচলের উপযোগী করে দেবে, আমরা ফেরি চালাবো।’ বিআইডব্লিউটিএ’র একজন কর্মকর্তা জানান, সাত্তার মাদবরের মঙ্গলমাঝির ঘাট দ্রুত চালুর তাগিদ রয়েছে। আগামী সপ্তাহে ঘাটটি চালুর জন্য বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

বাংলাবাজার-শিমুলিয়ায় রুটে চলাচলকারী ফেরি গত কয়েকদিনে চার দফা পদ্মা সেতুর সঙ্গে ধাক্কা লাগে। গত ২০ জুলাই প্রথম পদ্মা সেতুর ১৬ নম্বর পিলারের সঙ্গে ধাক্কা লেগে রো রো ফেরি শাহ মখদুমের তলা ছিদ্র হয়ে যায়। ২৩ জুলাই মাদারীপুরের বাংলাবাজার ঘাট থেকে ছেড়ে আসা রো রো ফেরি শাহজালাল ১৭ নম্বর পিলারে ধাক্কা দিলে তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

এরপর গত ৯ আগস্ট সন্ধ্যায় রো রো ফেরি বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর ১০ নম্বর পিলারে সজোর ধাক্কা খায়। সর্বশেষ ১৩ আগস্ট সকালে বাংলাবাজার ঘাট থেকে শিমুলিয়া ঘাটে আসার পথে কাকলি নামে একটি ফেরি পদ্মা সেতুর ১০ নম্বর পিলারটিতে আবারও ধাক্কা দেয়।

এসব ঘটনায় সেতুর পিলারের পানির লাগোয়া অংশে (পাইল ক্যাপ) পলেস্তারা উঠে গর্তের সৃষ্টি করেছে। এসব ঘটনায় ফেরির মাস্টার ও সুকানিদের বরখাস্ত করা হয়।

গত ২০ জুলাই সেতুতে প্রথম ফেরির ধাক্কা দেওয়ার ঘটনা তদন্তের জন্য বিআইডব্লিউটিসির পরিচালক আশিকুজ্জামানকে আহ্বায়ক করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটি তদন্ত প্রতিবেদনে পদ্মা সেতু রক্ষায় শিমুলিয়া-বাংলাবাজার ফেরি সার্ভিসের রুটটি পরিবর্তনের সুপারিশ করে।

এজন্য বাংলাবাজার ঘাটটি স্থানান্তর করে মাঝিরঘাটে নিয়ে আসা হয়। অথবা শিমুলিয়া ঘাটটি স্থানান্তর করে পুরনো মাওয়া ঘাটে নিয়ে যাওয়ার সুপারিশ করে কমিটি। এরপরই পদ্মা সেতু এড়িয়ে ফেরি চলাচলের বিষয়টি সক্রিয়ভাবে বিবেচনায় নেয় সরকার। ফেরিঘাট বাংলাবাজার

থেকে সাত্তার মাদবরের মঙ্গলমাঝির ঘাটে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গত ২১ আগস্ট শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার সাত্তার মাদবরের মঙ্গলমাঝির ঘাট নির্মাণের কাজ শুরু হয়। বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌপথের দূরত্ব ১০ কিলোমিটার। পারাপারে সময় প্রায় ২ ঘণ্টা। সাত্তার মাদবর ও মঙ্গলমাঝির ঘাট থেকে শিমুলিয়া ঘাটের দূরত্ব ৮ কিলোমিটার। তাই পারাপারে লাগবে মাত্র ১ ঘণ্টা ২০ থেকে ১ ঘণ্টা ৪০ মিনিট।