পাবনায় মজুত থাকা পেঁয়াজে আরও ৬ মাস চলবে

পাবনায় মজুত থাকা পেঁয়াজে আরও ৬ মাস চলবে

অর্থনীতি দেশ জুড়ে বাংলাদেশ

প্রতিবছর দুর্গাপূজার সময় নানা অজুহাতে বাংলাদেশের পেঁয়াজ রপ্তানি কমিয়ে দেন ভারতীয় ব্যবসায়ীরা। ফলে দুর্গাপূজার সময় দেশের অভ্যন্তরে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যায়। তবে ব্যবসায়ী নেতাদের দাবি, পূজার পর আমদানি বাড়লে দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম হাতের নাগালে চলে আসবে।

 

হিলি বন্দর সূত্রে জানা গেছে, গেলো দুই সপ্তাহে (৩০ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত ৪৫ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। সবশেষ রোববার (৩ অক্টোবর) ৭১১ টন এবং সোমবার (৪ অক্টোবর) ৬০০ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে।

 

স্থানীয় আড়তদারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হিলি বাজারের পাইকারি আড়তগুলোতে প্রতিদিন গড়ে ৫০ ট্রাক পেঁয়াজের চাহিদা রয়েছে। সেখানে আমদানি হচ্ছে মাত্র ২৫ ট্রাক। ফলে ঘাটতি থেকেই যাচ্ছে। এজন্য দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে।

 

হিলি বাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী শাকিল হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, তিনদিন আগে পেঁয়াজের যে দাম ছিল বর্তমানে তার চেয়ে কেজিপ্রতি ৮ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে। বৃহস্পতিবার আমরা যে পেঁয়াজ ৩৫ টাকা কেজি দরে কিনেছি এখন সেই পেঁয়াজ ৪২ টাকায় কিনতে হচ্ছে। ফলে খুচরা বাজারে প্রভাব পড়ছে।

 

 

আলম হোসেন নামের একজন ক্রেতা বলেন, ‘সব বিষয়ে শুধু আমাদের ওপরই প্রভাব পড়ে। তারপরও কিছু করার নেই। দাম বাড়লেও আমাদের কিনেই খেতে হবে।

 

কেন বাড়ছে পেঁয়াজের দাম? ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভারতের মধ্যপ্রদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করা হলেও আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় বর্তমানে বেঙ্গালুর থেকে আমদানি করছেন ব্যবসায়ীরা। বেঙ্গালুর থেকে ট্রাকে করে পেঁয়াজ হিলি বন্দরে আসতে সময় লাগে প্রায় সাতদিন। দীর্ঘপথ পেঁয়াজভর্তি

 

প্রতিটি ট্রাক ত্রিপল দিয়ে ঢাকা থাকায় এবং ট্রাকে বাতাস প্রবেশ না করায় অনেক পেঁয়াজে পচন ধরে। ফলে সেই পেঁয়াজগুলো রপ্তানি করে লোকসান গুনতে হয়। এছাড়া ভারতের পশ্চিমবঙ্গে শুরু হয়েছে দুর্গাপূজার আমেজ। এ সময় পূজা কমিটির সদস্যরা গাড়িপ্রতি চাঁদা নেন। ফলে পেঁয়াজ সরবরাহ কমিয়ে দেন ভারতীয় ব্যবসায়ীরা। এজন্য দেশের বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম বেড়ে যায়।

 

দুর্গাপূজায় সাতদিন ১১ অক্টোবর থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে দুদেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকবে। সে কারণে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা কয়েকদিনের জন্য পেঁয়াজ মজুত করে রাখার কারণে বাজারে দামের প্রভাব পড়েছে।

 

সংকট সমাধানে দেশি পেঁয়াজ! হিলি বাজারের আমদানি-রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হারুন-উর রশিদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘দেশের বাজারে এখন দেশীয় পেঁয়াজের চাহিদা রয়েছে।সারা বছর এ পেঁয়াজ ভারতীয় পেঁয়াজের চেয়ে বেশি মূল্যে বিক্রি হয়। ফলে এখন দেশের পাবনা অঞ্চলে যে পেঁয়াজ মজুত রয়েছে তা দিয়ে আমারা আগামী ছয় মাস চলতে পারবো।

 

 

তিনি আরও বলেন, ভারতীয় পেঁয়াজ মজুত করার কোনো সুযোগ নেই। কারণ ভারতের বিভিন্ন প্রদেশ থেকে পেঁয়াজগুলো বাংলাদেশে আসে। সেগুলো সাতদিনের বেশি গুদামজাত করে রাখলে পচন ধরে যাবে। অথচ বাংলাদেশি পেঁয়াজ দীর্ঘদিন ভালো থাকে। ফলে বেশি লাভের আশায় পাবনার বেশ কিছু ব্যবসায়ী পেঁয়াজ মজুত করে রাখেন।