কোম্পানীগঞ্জে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে ফাটল, খসে পড়ছে পলেস্তারা

বাংলাদেশ

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণের কয়েক মাসের মধ্যেই দেয়াল ও মেঝেতে ফাটল ধরেছে, খসে পড়ছে পলেস্তারা।

উপজেলার রামপুর ইউনিয়নে মুজিব কলোনী আশ্রয়ণ প্রকল্পে দেখা মেলে এমন দৃশ্যের। কয়েকটি ঘরের ভেতরে পানি পড়ে।

মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে আশ্রয়ণ প্রকল্পের অধীনে ভূমিহীনদের নতুন ৩৪টি ঘর বরাদ্দ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু উপকারভোগীদের কাছে হস্তান্তরের ৮ মাসের মধ্যে এসব ঘরের দেয়ালের পলেস্তারা খসে পড়ছে। মেঝের পলেস্তারা উঠে যাচ্ছে।

ভুক্তভোগীদের দাবি, আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণে নিম্নমানের ইট, বালু, কাঠ, টিন ব্যবহার করা হয়েছে এবং প্রয়োজনের তুলনায় সিমেন্ট কম ব্যবহার করা হয়েছে। নিম্নমানের কাজ হওয়ায় নির্মাণের ৮ মাসের মধ্যেই ঘরের দেয়াল ও মেঝেতে ফাটল ধরেছে। খসে পড়ছে দেওয়ালের পলেস্তারা। এ অবস্থায় ওই ঘরগুলোতে যে কোনো সময় বড় দুর্ঘটনার শঙ্কা রয়েছে।

সূত্রে জানা যায়, রামপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে মুজিব কলোনীতে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণের জন্য ৬৮ শতক খাসজমি নির্বাচন করা হয়। এ জমিতে ৩৪টি ঘর নির্মাণ করা হয়। প্রতিটি ঘর নির্মাণে ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা ব্যয় হয়। গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে এসব ঘর নির্মাণের কাজ শেষ হয়। ৩৪টি ঘরের মধ্যে ১২টির দলিল সুবিধা ভোগীদের হাতে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকি ২২টি ঘরের জমির দলিলও হস্তান্তরের কথা রয়েছে।

রামপুর ইউনিয়নর মুজিব কলোনী আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, অধিকাংশ ঘরের দেয়ালের পলেস্তারা খসে পড়ে আছে। এসব ঘরের মেঝেরও পলেস্তারা উঠে যাচ্ছে।

আশ্রয়ণ প্রকল্পে নতুন ঘর পেয়েছেন জাহিদুল ইসলাম বাবু। তিনি বলেন, ঘর পেয়ে গত ৮ মাস ধরে এখানে বাস করছেন। ঘরে ওঠার পরদিন থেকে দেয়ালের পলেস্তারা খসে পড়ছে। এ ছাড়া ঘরের মেঝের কয়েকটি স্থান থেকে পলেস্তারা উঠে গেছে। ৩৪টি ঘরের অধিকাংশ ঘরের বেহাল দশা বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সাবেক (পিআইও) কর্মকর্তা ফজলুল কাদের বলেন, উপজেলার আশ্রয়ণ প্রকল্পের আগের তৈরি হওয়া ঘরগুলোর সব মাল ক্রয় করে দেন আগের ইউএনও। বর্তমান ইউএনওর সাথে আলাপ করে এ বিষয়ে কথা বলা ভালো। আমি এখন বাহিরে আছি। এ মুহূর্তে এ বিষয়ে আমার কথা বলার সুযোগ নেই।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) জোবায়ের হোসেন বলেন, আমি কোম্পানীগঞ্জে নতুন জয়েন্ট করলাম এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারব না।

জানতে চাইলে তৎকালীন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বর্তমান চান্দিনা উপজেলার (ইউএনও) মো. জিয়াউল হক মীর বলেন, আমি মিটিংয়ে আছি। পরে ফোন করে কথা বলব। তবে তিন দিন আগে এক প্রশ্নের জবাবে ইউএনও জিয়াউল হক আশ্রয়ণ প্রকল্পের নির্মাণসামগ্রী ঠিকাদারকে কিনে দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখন কিনে দিচ্ছে কি না সেটা। এখন ইউএনও কিনে দিচ্ছে মনে হয়, জিজ্ঞেস করেন।

এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো.খোরশেদ আলম চৌধুরী ফোনে কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে নোয়াখালী জেলা প্রশাসসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন সমস্যা কাঙ্ক্ষিত না। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।