সুন্দরবনে চিংড়ি জালে সর্বনাশ!

বাংলাদেশ

বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন সুন্দরবনের নদী-খালের মোহনায় জেলেদের চিংড়ি জালে বিভিন্ন প্রকারের কোটি কোটি মাছের পোনা নিধন হচ্ছে। জেলেদের সুক্ষ ফাঁসের ওই জালে এক কেজি চিংড়ি মাছ ধরতে যেয়ে বিভিন্ন প্রজাতির কমপক্ষে একমন মাছের পোনা মারা পড়ছে। এর মধ্যে রয়েছে ইলিশ, কোরাল, বোয়াল, দাতনে, আইড়, তাড়িয়াল, তপশে, পোয়া, টেংড়া, কাইন ও কাকড়া, কচ্ছপ, হাঙ্গরসহ শতশত প্রজাতির মাছের পোনা। জেলেরা শুধু চিংড়ি মাছ সংগ্রহ করে অন্যসব মাছের মারা যাওয়া পোনা পানিতেই ফেলে দেয়। ফলে সুন্দরবনসহ উপকূলিয় নদ নদীতে ক্রমন্বয়ে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে।

জেলেরা জানায়, বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন সুন্দরবনের বলেশ্বর নদের শুকপাড়া, ডিমের চরের বাইর পাশ থেকে বাদামতলা পর্যন্ত, কটকা ও দুধমুখি নদীর মোহনা, ছাপড়াখালি ও শেলা নদীর মোহনা, দুবলার চরের বিভিন্ন নদী খালের মোহনায় চিংড়ি ধরার জন্য সুক্ষ ফাঁসের ওই বাঁধাজাল পাতা হয়। সংশ্লিষ্ট বন অফিসগুলোর সাথে যোগশাযোশে প্রতিবছরের চৈত্র থেকে আষাড় মাস পর্যন্ত শতশত নিষিদ্ধ এ জাল দিয়ে তারা কোটি কোটি মাছের পোনা ধ্বংস করে চলছে। ফলে অন্য জেলেরা সুন্দরবনসহ উপকূলের নদ-নদীতে আর তেমন মাছ পাচ্ছেন না।
নাম প্রকাশে অনেচ্ছুক জেলেরা জানান, প্রতিগোনে (আময়বশ্বা ও পূর্ণিমার সময় ৭ দিন করে) নির্দিষ্ট হারে জেলে নৌকা প্রতি জ্ঞানপাড়া, কচিখালি, কটকা, কোকিলমনি, শেলা ও দুবলার বন অফিসে উৎকোচ দিয়ে এ জাল পাততে হয়।

এব্যাপারে বাংলাদেশ মৎস্যজীবি ট্রলার মালিক সমিতির সহ-সভাপতি সাইফুল ইসলাম খোকন জানান, নিষিদ্ধ ওই বাঁধা জালে সাগরের সব ধরনের মাছের পোনা মারা পড়ছে। এভাবে চলতে থাকলে অচিরেই সুন্দরবনসহ উপকূলিয় নদ নদীতে কোন মাছ পাওয়া যাবে না।
শরণখোলা উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা বিনয় কুমার রায় বলেন, বঙ্গোপসাগর থেকে বয়ে আসা নদীর মোহনায় এ ধরনের সুক্ষ ফাঁসের জাল পাতার কারনে ইলিশসহ সব ধরনের মাছের পোনা নিধন হচ্ছে। তাই ওই জাল বন্ধের জন্য উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের মাধ্যমে বন বিভাগকে জাননো হবে।

বন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তা (এসিএফ) মোঃ শহিদুল ইসলাম জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে এধরনের জাল পাতা হলে তা বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।