পাকিস্তানে মন্ত্রিসভা গঠনে বেঁকে বসেছেন প্রেসিডেন্ট

আন্তর্জাতিক

দক্ষিণ এশিয়ার মুসলিম অধ্যুষিত রাষ্ট্র পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেহবাজ শরীফ দায়িত্ব গ্রহণের পর এক সপ্তাহ চলে গেলেও এখনো দেশটির কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা গঠন হয়নি। আর সেই বিলম্ব যেন কিছুতেই কাটছে না। সঙ্গে যোগ হচ্ছে একের পর এক নাটকীয়তা।
গতকাল সোমবার (১৮ এপ্রিল) দেশটির নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের শপথ গ্রহণের কথা থাকলেও এরই মধ্যে বেঁকে বসেন প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। তিনি শপথ পড়াতে অস্বীকৃতি জানালে মন্ত্রীদের শপথগ্রহণ পিছিয়ে দেওয়া হয়।

কিন্তু প্রেসিডেন্টের অস্বীকৃতির পর আসরে উপস্থিত হয়েছেন দেশটির সিনেটের চেয়ারম্যান। মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) তিনিই দেশটির নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের শপথবাক্য পাঠ করাবেন বলে সংবাদ প্রকাশের মাধ্যমে জানিয়েছে পাক মিডিয়া দ্য ডন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সোমবার মন্ত্রিসভার সদস্যদের শপথ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। যদিও প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি আইন প্রণেতাদের শপথবাক্য পড়াতে অস্বীকৃতি জানিয়ে দেন। আর এ জন্যই অনুষ্ঠানটি মঙ্গলবার সকাল ১১টা পর্যন্ত স্থগিত করতে বাধ্য হয় শেহবাজ শরীফের সরকার।

উত্তেজনাকর এমন পরিস্থিতিতে দেশটির সিনেটের চেয়ারম্যান সাদিক সানজরানি কমপক্ষে ২৯ জন ফেডারেল মন্ত্রী এবং চারজন প্রতিমন্ত্রীকে মঙ্গলবার শপথ পড়াবেন বলে আশা করা হচ্ছে। পিএমএল-কিউ-এর চৌধুরী তারিক বশির চিমা মন্ত্রিসভায় থাকার কথা থাকলেও আজ তিনি শপথগ্রহণ করবেন না।

দেশটির ক্ষমতাসীন নেতা শেহবাজ শরীফের নেতৃত্বাধীন সরকারের একটি সূত্রের বরাতে দ্য ডনের প্রতিবেদনে জানানো হয়, প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি মঙ্গলবারের (শপথগ্রহণ) অনুষ্ঠানেও যোগ দিচ্ছেন না। এখন সিনেটের চেয়ারম্যান সানজরানি মন্ত্রিসভার সদস্যদের শপথবাক্য পাঠ করাবেন।

সূত্রটি আরও জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট আলভি অসুস্থতার অজুহাত দেখিয়ে মঙ্গলবার আবারও ছুটিতে যাচ্ছেন। আর এ জন্য সাদিক সানজরানি ওই (শপথ পড়ানোর) দায়িত্ব সহজে পালন করতে পারবেন।
অন্যদিকে মন্ত্রিত্ব বণ্টন ও অন্যান্য লাভজনক পদের বিষয়ে জোটের মিত্ররা সরকারের কাছে যেসব দাবি জানিয়েছিল; তাতে তারা এখনো ‘অসন্তুষ্ট’ বলে জানা গেছে। আর তাই বেলুচিস্তান ন্যাশনাল পার্টি (বিএনপি) এবং জমিয়তে উলেমা-ই-ইসলাম-ফজল (জেইউআই-এফ) মঙ্গলবার মন্ত্রিসভায় নাও অংশ নিতে পারে। এছাড়া বেলুচিস্তানে সহিংস ঘটনা রোধ না করার প্রসঙ্গে এরই মধ্যে নতুন সরকারকে অভিযুক্ত করেছে বিএনপি।

এছাড়া পাকিস্তানের ক্ষমতাসীন সরকারের মুখপাত্র ও পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) এর নেত্রী মরিয়ম আওরঙ্গজেব বলেছেন ভিন্ন কথা। তার দাবি, মন্ত্রিসভার সদস্যদের তালিকা এখনো চূড়ান্ত করা হয়নি। আর তাই শপথ অনুষ্ঠানের আগে শেষ মুহূর্তে কিছু পরিবর্তন করা হতে পারে।

যদিও গত রবিবার তিনি জানিয়েছিলেন, নতুন মন্ত্রিসভায় পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) মোট ১৪টি মন্ত্রণালয় পাবে। আর পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) পাবে ১১টি মন্ত্রণালয়। এছাড়া জেইউআই-এফ এবং মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্টসহ (এমকিউএম) জোটভুক্ত সকল দলকে মন্ত্রিসভায় ঠাই দেওয়ার জোড় চেষ্টা চলছে। সূত্র : দ্য ডন।