শুকিয়ে কাঠ দানিয়ুব নদী, বেরিয়ে এল হিটলারের এক ডজন রণতরী

আন্তর্জাতিক

দারুণ দহনে পুড়ছে ইউরোপ। চড়ছে তাপমাত্রার পারদ। উষ্ণায়নের জেরে মাটি ফেটে চৌচির। শুকিয়ে কাঠ নদী। আর পানি শুকাতেই সেই নদীখাতের কাদায় ভাসতে দেখা গেল বিশ্বযুদ্ধের রণতরী। একটা দু’টো নয়, পুরো এক ডজন। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি যুদ্ধজাহাজ আবার বিস্ফোরক বোঝাই!

ঘটনার জেরে চোখ কপালে উঠেছে ইউরোপের একাধিক দেশের শীর্ষকর্তাদের। কীভাবে কাদা মাটিতে আটকে থাকা ওই যুদ্ধজাহাজগুলিকে তোলা হবে, তা নিয়ে শুরু হয়েছে চিন্তাভাবনা। রণতরীগুলির কয়েকটিতে বিস্ফোরক থাকায় তোলার সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকছে বলেও মনে করছেন প্রশাসনের ও সেনার কর্তাব্যক্তিরা। অন্যদিকে গবেষকদের দাবি, এই যুদ্ধজাহাজগুলিতে লুকিয়ে আছে বহু অজানা ইতিহাস। একবার সেগুলিকে নদীখাত থেকে তুলতে পারলে বোঝা যাবে কীভাবে ডোবানো হয়েছিল রণতরীগুলিকে। তবে সেই কাজে দীর্ঘ সময় লেগে যাবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

শুকনো নদীখাতের কোথায় দেখা মিলেছে যুদ্ধজাহাজের? এর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে সার্বিয়া। গত কয়েক মাস ধরে চলা দারুন তাপপ্রবাহের জেরে শুকিয়ে গিয়েছে সেখানকার দানিয়ুব নদীর পানি। আর পানি শুকোতেই সেখানে দেখা মেলে প্রায় এক ডজন যুদ্ধজাহাজের। বিষয়টি জানাজানি হতেই ওই এলাকায় চলে আসেন সার্বিয়া প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা। আসেন সেনার কর্মকর্তারাও। তাদের দাবি, এই রণতরীগুলির সবকটিই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার। নাজি জার্মানির উত্থানের সময় এডলফ হিটলারের নির্দেশে এগুলিকে তৈরি করা হয়ে।

১৯৪১-র ২২ জুন অপারেশন বার্বারোসার মাধ্যমে রাশিয়া আক্রমণের নির্দেশ দেন হিটলার। অনুমান ওই সময় এই রণতরীগুলিকে কৃষ্ণসাগরের দিকে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু ১৯৪৪-এ জার্মানির পরাজয় হলে রণতরীগুলি পিছতে শুরু করে। ওই সময় দানিয়ুবের বুকে সেগুলিকে ডুবিয়ে দেয়া হয়। তবে এর পিছনে মার্কিন নাকি ব্রিটিশ নৌসেনার হাত ছিল, তা এখনও স্পষ্ট হয়নি। যুদ্ধ শেষ হওয়ার ৭৭ বছর পর ফের খোঁজ মিলল হিটলারের সাধের রণতরীগুলির। যেগুলি দিয়ে ‘সমুদ্র সিংহ’ ব্রিটিশদের একদিন শিকার করতে চেয়েছিল তিনি। কৃষ্ণসাগরের বুকে ওড়াতে চেয়েছিলেন নাজি পতাকা।

তবে শুধু দানিয়ুব নয়, বিশ্বযুদ্ধের বোমা মিলেছে ইতালির পো নদীর বুকেও। গত জুলাইতে সেখানে ৪৫০ কেজি একটি বোমা খুঁজে পান এক মৎস্যজীবী। পরে সেটি উদ্ধার করে নিয়ে যায় সেনা। তাদের দাবি, ওই বোমাটিও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার। বিশেষজ্ঞদের দাবি, গত ৮ দশকের মধ্যে ইউরোপের নদীগুলি দিয়ে বর্তমানে সবচেয়ে কম পানি প্রবাহিত হচ্ছে। কয়েকদিন আগে খরার জন্য জরুরি অবস্থায় ঘোষণা করে বেশ কয়েকটি দেশ। যার মধ্যে রয়েছে ব্রিটেনও