নবিজি (সা.) নারীদের যেসব কাজকে অভিশাপ দিয়েছেন

ধর্ম

নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নারী-পুরুষের অনেক কাজকেই ধ্বংসাত্মক বলেছেন। আবার এসব কাজের জন্য তাদের অভিশাপ দিয়েছেন। আবার শুধু নারীদের উদ্দেশ্য করে অনেক ধ্বংসাত্মক কাজের কথা বলেছেন, তাদের অভিশাপ দিয়েছেন। অভিশাপ দেওয়া সেসব নারী কারা?

১. যারা চোখের উপরের লোম (ভ্রুপ্লাগ)

ওঠায় এবং অন্যকে ওঠাতে সাহায্য করে। হাদিসে এসেছে- হজরত আবদুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, ‘আল্লাহ লানাত করেছেন ওইসব নারীর প্রতি যারা অন্যের শরীরে উল্কি অংকণ করে, নিজ শরীরে উল্কি অংকণ করায়, যারা সৌন্দর্যের জন্য ভ্রু-চুল উপড়িয়ে ফেলে

ও দাঁতের মাঝে ফাঁক সৃষ্টি করে। সে সব নারী আল্লাহর সৃষ্টিতে বিকৃতি আনয়ন করে। এরপর বনি আসাদ গোত্রের উম্মু ইয়াকূব নামের এক নারীর কাছে এ সংবাদ পৌঁছলে সে এসে বলল, আমি জানতে পারলাম, আপনি এ ধরনের নারীদের প্রতি অভিশাপ করেছেন। তিনি বললেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যার প্রতি লানাত করেছেন,

আল্লাহর কিতাবে যার প্রতি লানাত করা হয়েছে, আমি তার প্রতি লানাত করব না কেন? তখন (ওই) নারী বলল, আমি দুই ফলকের মাঝে যা আছে তা (পূর্ণ কোরআন) পড়েছি। কিন্তু আপনি যা বলেছেন, তা তো এতে পাইনি।

হজরত আবদুল্লাহ বললেন, যদি তুমি কোরআন পড়তে তাহলে অবশ্যই তা পেতে, তুমি কি পড়নি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তোমাদেরকে যা দেন তা তোমরা গ্রহণ করো এবং যা থেকে তোমাদেরকে নিষেধ করেন তা থেকে বিরত থাক।

(ওই) নারী বলল, হ্যাঁ, নিশ্চয়ই পড়েছি। হজরত আবদুল্লাহ বললেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ কাজ করতে নিষেধ করেছেন। তখন (ওই) নারী বলল, আমার মনে হয় আপনার পরিবারও এ কাজ করে তিনি বললেন, তুমি যাও এবং ভালোমতো দেখে এসো। এরপর নারী গেল এবং ভালভাবে দেখে এলো। কিন্তু তার দেখার কিছুই দেখতে পেলো না।

তখন হজরত আবদুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, যদি আমার স্ত্রী এমন করত, তবে সে আমার সঙ্গে একত্রে থাকতে পারতো না।’ (বুখারি, মুসলিম, মুসনাদে আহমাদ)

২. নারী হয়েও পুরুষের বেশ ধারণ করে।

হাদিসে এসেছে- হজরত ইবনু আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নারীর সাদৃশ্য গ্রহণকারী পুরুষ এবং পুরুষের সাদৃশ্য গ্রহণকারিণী নারীদের ওপর অভিশাপ দিয়েছেন এবং বলেছেন, ‘তাদেরকে তোমাদের ঘর থেকে বের করে দাও।’ (বুখারি, দারেমি, আবু দাউদ, ইবনু মাজাহ)

হজরত আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু আরও বর্ণনা করেছেন, নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আল্লাহর লানত সে পুরুষদের ওপর যারা নারী সাদৃশ্য ধারণ করে এবং সে সব নারীদের ওপর যারা পুরুষ সাদৃশ্য ধারণ করে।’ (বুখারি, মিশকাত)

৩. যে নারী সুগন্ধি মেখে বাইরে বের হয়। হাদিসে এসেছে-

ধ্বংস হোক তারা, যেসব নারী সুগন্ধি মেখে বের হলো এবং অন্য কোনো পুরুষের নাকে সেটার ঘ্রাণ গেলো; ওই নারী ব্যাভিচারিণী।’ (জামে)

৪. শরীরে উল্কি আঁকে

ধ্বংস হোক ওইসব নারী, যারা শরীরে উল্কি (ট্যটু) আঁকে এবং অন্যকেও এঁকে দেয়। হাদিসে এসেছে- হজরত আবদুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, ‘আল্লাহ লানাত করেছেন ওইসব নারীর প্রতি যারা অন্যের শরীরে উল্কি অংকণ করে, নিজ শরীরে উল্কি অংকণ করায়।’ (বুখারি, মুসলিম)

৫. পরচুলা বা আলগা চুল ব্যবহার করে

অভিশাপ তাদের জন্য যেসব নারী পরচুলা (আলগা চুল) পরে। হাদিসে এসেছে-

হজরত আবদুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, যে নারী নকল চুল লাগায়, তার প্রতি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম লানত করেছেন।’ (বুখারি)

৬. না জেনে মিথ্যা ধারণা করে ও অপবাদ দেয়

ওইসব নারী, যারা না জেনেই ধারণা করে এবং অন্যের নামে মিথ্যা অপবাদ রটায়। হাদিসে এসেছে- হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা খারাপ ধারণা করা থেকে বেঁচে থাকো।

কেননা, খারাপ ধারণা প্রসূত বিষয় সর্বাপেক্ষা মিথ্যা। আর তোমরা ছিদ্রান্বেষণ করো না, গোয়েন্দাগিরি করো না, সুপ্তদোষ অনুসন্ধান করো না, তোমরা পরস্পর লিপ্সা করো না, পরস্পর পরস্পরের প্রতি শত্রুতা করো না, হিংসা করো না; একে অন্যের পিছনে লেগে থেকো না বরং তোমরা সবাই আল্লাহর বান্দা হিসেবে ভাই ভাই হয়ে যাও।’ (মুসলিম)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সব নারীকে উল্লেখিত ধ্বংসাত্মক/অভিশপ্ত কাজ থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন।