যেভাবে উঠে এলেন ইতালির সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি

আন্তর্জাতিক

ইতালির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন উগ্র ডানপন্থী দল ব্রাদার্স অব ইতালির প্রধান জর্জিয়া মেলোনি। গত রবিবারের নির্বাচনে ২৬ শতাংশ ভোট পেয়েছে তাঁর দল। অথচ ২০১৮ সালের মাত্র ৪ শতাংশ ভোট পেয়েছিল দলটি। এত অল্প সময়ের ব্যবধানে ভোটের মাঠের পটপরিবর্তনের কারণে মেলোনিকে নিয়ে আগ্রহ বেড়েছে।

১৯৭৭ সালের ১৫ জানুয়ারি ইতালির রাজধানী রোমে জন্ম হয় মেলোনির। মাত্র এক বছর বয়সে মেলোনি ও তাঁর মাকে ছেড়ে চলে যান বাবা ফ্রান্সেসকো। তিনি ছিলেন বামপন্থী আর মেলোনির মা আনা ছিলেন ডানপন্থী। জল্পনা আছে, বাবার ওপর প্রতিশোধ নিতেই তিনি ডানপন্থী রাজনীতিতে যোগ দেন। স্বামী চলে যাওয়ার পর মেলোনিকে নিয়ে বাপের বাড়ির কাছাকাছি চলে যান তাঁর মা আনা।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ফ্যাসিবাদী একনায়ক বেনিতো মুসোলিনির সমর্থকরা ইতালিয়ান সোশ্যাল মুভমেন্ট (এমএসআই) নামের এক রাজনৈতিক দল গড়েন। মাত্র ১৫ বছর বয়সে সেই দলের যুব শাখায় যোগ দেন মেলোনি। পরে এমএসআইয়ের উত্তরসূরী উগ্র ডানপন্থী জাতীয় জোটের ছাত্রশাখার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। উগ্র ডানপন্থী জাতীয় জোটের প্রচারণার সময় একটি টিভি চ্যানেলকে সেদিনের ১৯ বছর বয়সের মেলোনি বলেছিলেন, ‘মুসোলিনি ছিলেন একজন ভালো রাজনীতিক। তিনি যা করেছেন, তা ইতালির জন্য করেছেন। ’

তবে ২০০৬ সালে জাতীয় জোট থেকে এমপি নির্বাচিত হয়ে সুর পাল্টে ফেলে মেলোনি বলেন, মুসোলিনি ‘ভুল’ করেছিলেন। বিশেষ করে জাতিগত আইন, কর্তৃত্ববাদ জারি করে ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে এডল্ফ হিটলারের জার্মানির পক্ষে যোগ দিয়ে।

২০০৮ সালে ৩১ বছর বয়সী মেলোনিকে ইতালির সর্বকনিষ্ঠ মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী সিলভিও বারলুসকোনি। এরপর ২০১২ সালে নিজের দল ব্রাদার্স অব ইতালি প্রতিষ্ঠা করেন মেলোনি।

ব্রাদার্স অব ইতালির সঙ্গে নব্য নাৎসীবাদীদের সম্পর্কের অভিযোগ রয়েছে। এই বিষয়ে ইঙ্গিত করা হলে মেলোনি বরাবরই ক্ষুব্ধ হন। সম্প্রতি উগ্র ডানপন্থী ভাবমূর্তি কিছুটা বদলেছেন মেলোনি। একদিকে যেমন রাশিয়ার বিরুদ্ধে দেওয়া পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞায় সমর্থন দিয়েছেন, অন্যদিকে ইউরোপ নিয়ে কড়া মন্তব্য করাও কমিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু জাতীয় নির্বাচনে তিনি ঠিকই ফ্যাসিস্টদের স্লোগান ‘ঈশ্বর, দেশ ও পরিবার’ নিয়ে প্রচারণা চালিয়েছেন। আরো অনেক ডানপন্থী নেতার মতই ‘এলজিবিটি লবির’ বিরুদ্ধে সোচ্চার মেলোনি। ইতালিতে অভিবাসীদের আগমন ঠেকাতে উপকূলে নৌ অবরোধও দেওয়ার পক্ষে এই রাজনীতিক। সূত্র : বিবিসি,