লাক্ষ এর অধিক প্রবাসী কর্মী অনিশ্চয়তার মুখে

আন্তর্জাতিক প্রবাস

ঢাকাস্থ সউদী দূতাবাসের সকল কার্যক্রম গতকাল রোববার বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। করোনা মহামারির উচ্চ সংক্রমণ এবং মৃত্যু হারের কারণে সরকার আজ সোমবার থেকে জরুরি পরিসেবা ব্যতিত সমগ্র দেশে লকডাউন ঘোষণা করায় সউদী দূতাবাস কর্তৃপক্ষ এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

কঠোর লকডাউন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত দূতাবাসের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। গতকাল দূতাবাসের টুইটার পেজে এ ঘোষণা দেয়া হয়েছে।

গতকাল সকালে বিভিন্ন রিক্রুটিং এজেন্সি সউদী দূতাবাসে ভিসা স্ট্যাম্পিং করার জন্য পাসপোর্ট জমা দিতে গেলে দূতাবাসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা পাসপোর্ট জমা না নিয়ে ফেরত দেয়া হয়।

দূতাবাস বন্ধ ঘোষণার খবর ছড়িয়ে পড়লে সউদীগামী কর্মীদের মাঝে চরম হতাশা দেখা দেয়। একাধিক রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক এতথ্য জানিয়েছেন।

দূতাবাস বন্ধ ঘোষণা করায় সহস্রাধিক বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সির কাছে শত শত সউদীগামী কর্মীর ভিসা আটকা পড়েছে। ফলে এসব অপেক্ষমান কর্মীর বিদেশ যাত্রা অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছেন।

বায়রার সাবেক ইসির সদস্য ও এ্যাকটিভ ম্যানপাওয়ার সার্ভিসের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ আলী আজ ইনকিলাবকে বলেন, সউদী দূতাবাস বন্ধ ঘোষণা করায় লক্ষাধিক প্রবাসী কর্মী সউদী যাত্রায় অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছেন।

তিনি বলেন, জাতীয় শিল্পনীতি ২০১৬ এর সেবা শিল্পসমূহ এর তালিকার নং ক্রমিকে বৈদেশিক কর্মসংস্থানকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ জন্য তিনি সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, লকডাউন চলাকালে বিদেশগামী কর্মীদের চলাচলের ওপর সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা ঘোষণা দেয়া হয়নি।

বায়রার সাবেক নেতা মোহাম্মদ আলী লকডাউন চলাকালে জনশক্তি রফতানি খাতকে অগ্রাধিকার দিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিদেশগামী কর্মীদের নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত রাখতে হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সউদীর ওয়ানওয়ে বিমানের টিকিটের দাম কয়েকগুন বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া সউদীতে হোটেল কোয়ারেন্টিনের ৭০ হাজার টাকা যোগাতে কর্মীরা হিমসিম খাচ্ছে। তিনি সউদীর শ্রমবাজার ধরে রাখতে কার্যকরী উদ্যোগ নেয়ার ওপরগুরুত্বারোপ করেন।

রিক্রুটিং ঐক্য পরিষদের সভাপতি এম টিপু সুলতান সউদী দূতাবাস বন্ধ ঘোষণা করায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, সরকার আগামীকাল থেকে লকডাউন শিথিল করেছে এবং আগামী ১ জুলাই থেকে কঠোর লকডাউন আসতে পারে। তিনি বলেন, সউদী দূতাবাস বন্ধ হওয়ায় সউদীগামী শত শত কর্মীর মেডিকেল পরীক্ষার মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে।

অপেক্ষমান সউদীগামী কর্মীরা অনিশ্চয়তার মুখে পড়বে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জনশক্তি রফতানির খাতের স্বার্থে দ্রুত সউদী দূতাবাস খোলার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়ার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রীর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

এদিকে, এখন থেকে সউদী আরবে প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মীদের হোটেল কোয়ারেন্টিনের ব্যয় বহন করতে হবে না। দেশটি নিয়োগকর্তা বা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি হোটেল কোয়ারেন্টিনের ব্যয় বহন করবে। গতকাল ঢাকাস্থ সউদী রাষ্ট্রদূত এমন আশ্বাস দিয়েছেন।