১১০০ টাকার বিড়ালের খাবার বেচতে গিয়ে জরি’মানা দিলেন ৪০০ টাকা

জাতীয় বাংলাদেশ বিশেষ প্রতিবেদন

সোমবার বেলা সাড়ে ১২টায় রাজধানীর ঝিগাতলা মোড়ে চলছিল পুলিশের এলিট ফোর্স র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) ভ্রাম্যমাণ আদালতে। কাজী আব্দুস সালাম নামে এক রিকশার যাত্রীকে নামানো হয়। তিনি জানান, বিড়ালের খাবার বিক্রির জন্য যাচ্ছিলেন মোহাম্মদপুরে। চলতি পথে র্যাব রিকশা থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। ম্যাজিস্ট্রেট বিড়ালের

 

 

খাবার বিক্রির ভাউচার দেখতে চাইতেই তিনি কোনো কাগজ দেখাতে পারেননি। এ কারণে আব্দুস সালাম ও তার সহকর্মীকে ৪০০ টাকা জ’রিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। র্যাব সদরদফতরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাজহারুল ইসলাম বলেন, জরুরি প্রয়োজনের মধ্যে বিড়ালের খাবার বিক্রি করার

 

 

জন্য দু’জনকে ৪০০ টাকা জরি’মানা করা হয়। তারা খাবার বিক্রির কোনো ভাউচার দেখাতে পারেনি। জরি’মানা পরিশোধের পর কাজী আব্দুস সালাম বলেন, কাঁটাবনে তাদের দোকান আছে। সেই দোকান থেকে কিছুদিন আগে মোহাম্মদপুরের একজন দুটি বিড়াল কিনেছেন। বিড়াল দুটি নিয়ে তার আজ রাতেই যশোর যাওয়ার কথা।

 

তাই দোকান থেকে বিড়ালের খাবার নিয়ে মোহাম্মদপুরের দিকে যাচ্ছিলেন। তিনি বলেন, ১১০০ টাকার খাবার বিক্রি করতে গিয়ে জ’রিমানাই দিলাম ৪০০ টাকা। তাহলে লাভ থাকল কি? এর মধ্যে যদি পথে আবারও কোনো চেকপোস্টে ধরে তাহলে জরি’মানা দেব কিভাবে?

 

 

শুধু আব্দুস সালামই নয়, এমন অনেকেই ঘর থেকে বেরিয়েছেন, যাদের কেউ অসুস্থ আত্মীয়ের বাসায় যাচ্ছেন তাকে দেখতে। কেউ খাবার নিয়ে আত্মীয়ের বাসায় যাচ্ছেন। কেউ শরীরচর্চার জন্য জিমে যাচ্ছেন। কেউ আবার টিউশনির জন্য বের হয়েছেন।

 

 

মামুন ব্যাপারী নামের একজন ধানমন্ডি-১ নম্বরের একটি বাসায় বুয়া সাপ্লাই দিয়ে তার নিজ বাসায় ফিরছিলেন। এমন সময় র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতের সামনে পড়লে তাকে জিজ্ঞাসার পর ২০০ টাকা জ’রিমানা করা হয়।

 

এ ব্যাপারে র্যাব সদরদফতরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাজহারুল ইসলাম বলেন, এখন সরকারঘোষিত কঠোর লকডাউন চলছে এই সময়ে অত্যন্ত অত্যাবশ্যক প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের না হওয়ার নির্দেশনা রয়েছে।

 

 

এই সময়ে বিড়ালের খাবার বিক্রি খুবই জরুরি কোনো বিষয় নয়। এজন্য ওই দুজন ব্যক্তিকে ৪০০ টাকার জ’রিমানা করা হয়েছে। অন্যদিকে, এখন বুয়া সাপ্লাই করার সময়ও না। এজন্য মামুন ব্যাপারীকে জ’রিমানা করা হয় ২০০ টাকা।

 

 

তিনি বলেন, এবার সরকার যে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছে তা কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি জীবিকা নিশ্চিত করার জন্য। হয়তো লকডাউনের কারণে সাময়িক সমস্যা হচ্ছে কিন্তু এটার দীর্ঘমেয়াদী ফল রয়েছে। ব্যক্তি পরিবার, সমাজ, দেশকে করোনা থেকে সুরক্ষার দিকটা বিবেচনায় আমরা কঠোরভাবে সরকারি বিধিনিষেধ পরিপালনে চেষ্টা করছি।

 

সাড়ে ১২টা থেকে শুরু হওয়া র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতে ১১ জনকে জ’রিমানা করা হয় মোট দুই হাজার ২০০ টাকা।