কুন্দুজ শহরের একটি মসজিদে ভয়াবহ বোমা হামলায় নিহত ৩৩

আন্তর্জাতিক ধর্ম

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আফগানিস্তানের কুন্দুজ শহরের একটি মসজিদে ভয়াবহ বিস্ফোরণে কমপক্ষে ৩৩ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন শিশুসহ অন্তত ৪৩ জন। এখন পর্যন্ত হামলার দায় স্বীকার করেনি কোনো গোষ্ঠী। খবর আলজাজিরার।

আবারও ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল আফগানিস্তান। শুক্রবার (২২ এপ্রিল) দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় শহর কুন্দুজের ইমাম সাহেব জেলার একটি মসজিদে বিস্ফোরণে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। এতে শিশুসহ আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। দুদিনে পরপর দুটি বড় ধরনের বোমা হামলার ঘটনা ঘটল দেশটিতে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার নামাজের সময় একটি বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পান তারা, একইসঙ্গে কেঁপে ওঠে পুরো মসজিদ। শুরু হয় ছোটাছুটি। এ সময় অনেককেই মাটিতে পড়ে থাকতে দেখা যায়। যাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছে বলেও জানানো হয়। ঘটনার পর আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়।

হামলার পর এক টুইটবার্তায় এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান তালেবান সরকারের তথ্যমন্ত্রী জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ। পাশাপাশি নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। এই হামলায় জড়িতদের কঠিন শাস্তি ভোগ করতে হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি।

এর আগে গেল বৃহস্পতিবার আফগানিস্তানজুড়ে চারটি সিরিজ হামলা হয়। পরে ওই হামলার দায় স্বীকার করে আইএস। তবে শুক্রবারের হামলার দায় এখনো কোনো গোষ্ঠী স্বীকার করেনি। যদিও স্থানীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমের দাবি, এই হামলার সঙ্গেও একই জঙ্গিগোষ্ঠী জড়িত। একই দিনে কুন্দুজে আরেকটি হামলায় নিহত হন ৪ জন এবং আহত হন ১৮ জন। কুন্দুজের পুলিশ প্রশাসন জানিয়েছে, দুই হামলার ঘটনা খতিয়ে দেখছে তারা।

এসব হামলার ঘটনায় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে তালেবান সরকার। শুক্রবারের হামলা ছিল গত বছর আগস্টে তালেবান ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পর সবচেয়ে বড় হামলার ঘটনা। আফগানিস্তানের তালেবান সরকার জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের খোরাসান শাখাকে (আইএস-কে) পরাজিত করেছে বলে দাবি করলেও তাদের নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

এর আগে গত অক্টোবরে একটি শিয়া মসজিদে বোমা হামলায় ৫৫ জন নিহত এবং আহত হন আরও অনেকে। সেই হামলার দায় স্বীকার করে আইএস।

এদিকে আফগানিস্তানের মানবাধিকারবিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধি রিচার্ড বেনেট এই হামলার নিন্দা করেছেন। তিনি এক টুইটার পোস্টে লিখেছেন, ‘আজ আবারও বিস্ফোরণে আফগানিস্তান কাঁপছে এবং আবারও হাজারা সম্প্রদায় হামলার শিকার।’

আফগানিস্তানের আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রভাষক ওবায়দুল্লাহ বাহির বলেন, তালেবানকে নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। তিনি আরও বলেন, দেশটির অর্থনৈতিক অবস্থা পুনরুদ্ধারের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে তালেবানের একত্রে বসা দরকার।