ক্যাপ্টেন্স ডে-তে কাকে খোঁচা দিলেন সাকিব?

খেলাধুলা

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নামে ডাকা হলেও ২০১৬ পর্যন্ত টি-টোয়েন্টির বিশ্বআসরের নামটা কাগজে কলমে ছিল ‘আইসিসি ওয়ার্ল্ড টি-টোয়েন্টি’। গেল বিশ্বকাপে সেটা বদলে হয়েছে ‘আইসিসি মেন্স টি-টোয়েন্টি ওয়ার্ল্ড কাপ’। সঙ্গে সঙ্গে ক্রিকেটের ক্ষুদ্রতর ফরম্যাটের এই টুর্নামেন্টের গুরুত্বটাও যেন বাড়ানোর ইঙ্গিত ছিল আইসিসির।

তবে গেল বার নাম বদলে গেলেও ওয়ানডে বিশ্বকাপের সঙ্গে ঐতিহ্যগত দিক থেকে একটা ফারাক ছিল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের। ওয়ানডে বিশ্বকাপে টুর্নামেন্ট শুরুর আগের দিন সব অধিনায়কদের নিয়ে একটা আনুষ্ঠানিক ফটোসেশন করা হয় বিশ্বকাপের ট্রফির সঙ্গে। অধিনায়কদের খোশগল্প হয়, সংবাদ সম্মেলনে চলে কথার তুবড়িও। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সেটা কখনো হয়নি আগে।

এবার সে রীতি ভাঙল আইসিসি। আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, বিশ্বকাপ শুরুর ঠিক আগের দিন ট্রফিসহ একটা ফটোসেশন হবে, হবে সংবাদ সম্মেলনও। দিনটার নাম ‘ক্যাপ্টেন্স মিডিয়া ডে’। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ইতিহাসে এমন কিছু হয়েছে এই প্রথম।

বিশ্বকাপ মাঠে গড়াবে আগামীকাল রোববার থেকে। নামিবিয়ার বিপক্ষে এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কার ম্যাচ দিয়ে মাঠে গড়াবে অষ্টম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। তার ঠিক আগের দিন, আজ শনিবার মেলবোর্নের রিজেন্ট থিয়েটারের প্লাজা বলরুমে অনুষ্ঠিত হলো অধিনায়কদের সেই মিলনমেলা।

দুই ভাগে আট-আট ষোলজন অধিনায়ক এলেন এই ফটোসেশনে। বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের দেখা মিলল দ্বিতীয় ধাপে। এর আগে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান, নেদারল্যান্ডস, নামিবিয়া ও আরব আমিরাতের অধিনায়করা আসেন প্রথম ধাপে।

সাকিবের সঙ্গে দ্বিতীয় দফায় মঞ্চে আসেন ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা, পাকিস্তানের বাবর আজম, দক্ষিণ আফ্রিকার টেম্বা বাভুমা, ওয়েস্ট ইন্ডিজের নিকোলাস পুরান, আয়ারল্যান্ডের অ্যান্ডি বলবার্নি স্কটল্যান্ডের রিচার্ড বেরিংটন, জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক ক্রেইগ আরভিন।

অনুমিতভাবেই সবচেয়ে বেশি প্রশ্নের মুখে পড়েছেন ভারত-পাকিস্তানের দুই অধিনায়ক। রোহিত আর বাবর দু’জন ওপেনার, নতুন বলের ছোবল সামলানোর মতো করেই সামলেছেন সব প্রশ্ন।

সাকিবের পালা আসে অনুষ্ঠানের শেষ দিকে। আয়ারল্যান্ড অধিনায়ককে করা শেষ প্রশ্নের আগে সাকিবের কাছে তার দল নিয়ে জানতে চান সঞ্চালক, অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠেয় এই বিশ্বকাপে দলের কাছে কী চান তিনি, সেটাও জানতে চাওয়া হয় সাকিবের কাছে।

সাকিব জবাবে বলেন, ‘আমাদের দলের বেশিরভাগই নতুন। তাদের জন্য দারুণ অভিজ্ঞতা অপেক্ষা করছে। আমরা সবাই অবশ্য এবার অস্ট্রেলিয়ায় প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলব।’ সঞ্চালক খানিকটা বিস্মিতই হয়েছিলেন শেষ বাক্যটায়।

অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশ সবশেষ ম্যাচটা খেলেছে সেই ২০১৫ সালে, ওয়ানডে বিশ্বকাপে। এর আগে ২০০৮ সালে সবশেষ সেই দেশটি সফর করেছে বাংলাদেশ। তবে সেবারও শুধু ওয়ানডেই খেলেছে দল। আর পূর্ণাঙ্গ সফর হিসেব করলে ফিরতে হবে সেই ২০০৩ সালে। সেই সফরে টেস্ট আর ওয়ানডে খেলেছে বাংলাদেশ, আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির অস্তিত্বই ছিল না তখন।

ফলে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে কখনোই টি-টোয়েন্টি খেলেনি বাংলাদেশ। বাংলাদেশকে ডাকতে অস্ট্রেলিয়ার অনীহা অনেক দিনেরই, আইসিসির ফিউচার ট্যুর প্ল্যানেও অস্ট্রেলিয়া সফরের দেখা মেলে না তেমন। ফলে সে দেশে বাংলাদেশের ম্যাচ খেলার সুযোগই আসে কালে ভদ্রে! সে বিষয়েই একটা খোঁচা দিলেন সাকিব। সঞ্চালকের বিস্ময়ের জবাবে তিনি বললেন, ‘হ্যাঁ (কখনো এখানে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলা হয়নি), আর আমি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলছি ১৫ বছর ধরে।’

সাকিব অবশ্য জানিয়েছেন, তার দলের প্রস্তুতি ভালোই হয়েছে। বললেন, ‘আমরা দারুণ প্রস্তুতি নিয়েছি। ক্রাইস্টচার্চে দুটো ভালো দলের মুখোমুখি হয়ে ৪ ম্যাচ খেলেছি আমরা। অস্ট্রেলিয়ায় কী করে ভালো করতে হবে, সেটাও জানা হয়ে গেছে আমাদের। এর জন্য পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নেওয়া হয়ে গেছে আমাদের।’