বৈধ পথে লিবিয়া যেতে পারবেন বাংলাদেশি কর্মীরা, সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর

বৈধ পথে লিবিয়া যেতে পারবেন বাংলাদেশি কর্মীরা, সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর

অর্থনীতি দেশ জুড়ে প্রবাস বাংলাদেশ

লিবিয়ায় বৈধ পথে কর্মী পাঠাতে পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়ে বাংলাদেশ একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করেছে। এর মাধ্যমে লিবিয়ায় বৈধভাবে বাংলাদেশিদের জন্য নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপলিতে গতকাল বুধবার বাংলাদেশের প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ এবং লিবিয়ার শ্রম ও পুনর্বাসনমন্ত্রী আলী আবেদ রেজা এ স্মারক স্বাক্ষর করেন। এ সময় বাংলাদেশ থেকে আগত উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদলের সদস্যরা ও লিবিয়ায় নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল আবুল হাসনাত মুহাম্মদ খায়রুল বাশার ও লিবিয়ার শ্রম মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।আজ বৃহস্পতিবার প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এটি নিশ্চিত করা হয়েছে।এতে বলা হয়, সমঝোতা স্মারক লিবিয়ায় নিয়োগ পাওয়া বাংলাদেশি নাগরিকদের অধিকার সুরক্ষা করবে এবং প্রবাসীদের রেমিট্যান্স পাঠানো ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।

 

 

এ ছাড়া সমঝোতা স্মারকটি লিবিয়ায় অবৈধ অভিবাসন প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। এটি বাংলাদেশ ও লিবিয়ার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নত করবে এবং দুই দেশের ভ্রাতৃত্বপূর্ণ বন্ধনকে আরও শক্তিশালী করবে বলে আশা করা যাচ্ছে।এ সমঝোতার আওতায় লিবিয়ায় নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মীদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা, বিশেষ করে বেতন-ভাতা, কর্মকাল, আবাসন, খাদ্য, ছুটি ও সার্ভিস বেনিফিট উল্লেখ করে নিয়োগকর্তার সঙ্গে একটি প্রাথমিক চুক্তি বাংলাদেশে স্বাক্ষরিত হবে। ফলে লিবিয়ায় আসা কর্মীরা দেশে থাকতেই তাদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে জানতে পারবেন।

 

এ ছাড়া নিয়োগপ্রক্রিয়ায় সর্বোত্তম তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে ভিসাপ্রক্রিয়া সহজ করা হবে এবং নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মীদের লিবিয়ায় আসা ও মেয়াদ শেষে দেশে ফেরার খরচ নিয়োগকর্তা বা কোম্পানি বহন করবে।সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের আগে প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী লিবিয়ার শ্রমমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন।বৈঠকে লিবিয়ার শ্রমমন্ত্রী বলেন, এত দিন বাংলাদেশ থেকে লিবিয়ায় কর্মী নিয়োগের কোনো সমঝোতা স্মারক কার্যকর না থাকায় বিভিন্ন মহল সুযোগ গ্রহণ করে আসছিল। ফলে বাংলাদেশি কর্মীরা বিভিন্ন প্রতারণার শিকার এবং জটিলতার সম্মুখীন হচ্ছিলেন। সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের ফলে একটি আইনি কাঠামো তৈরি হয়েছে। যার মাধ্যমে বাংলাদেশি কর্মীদের অধিকার নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। একই সঙ্গে লিবিয়ায় নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মীরা সামাজিক নিরাপত্তা ও চিকিৎসাবিমার আওতায় আসবে বলে মন্ত্রী জানান।এ ছাড়া তিনি জানান, লিবিয়ায় অবৈধভাবে বসবাসরত বিদেশি কর্মীদের নিয়মিত করতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে একটি উচ্চপর্যায়ের জাতীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশিদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে বলে তিনি জানান।প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমদ লিবিয়ার শ্রমমন্ত্রীর তুলে ধরা প্রস্তাবকে স্বাগত জানান। তিনি লিবিয়ায় আসা কর্মীদের ভিসা সংগ্রহ থেকে শুরু করে যাবতীয় ব্যয় নিয়োগকর্তা বা কোম্পানির মাধ্যমে বহন করার ব্যবস্থা করে অভিবাসন খরচ শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার জন্য লিবিয়ার শ্রমমন্ত্রীকে অনুরোধ জানান। একই সঙ্গে তিনি কর্মীদের সামাজিক নিরাপত্তা এবং চিকিৎসাবিমার ব্যয় নিয়োগকর্তার মাধ্যমে পরিশোধেরও অনুরোধ করেন। মন্ত্রী বাংলাদেশের জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ প্রদত্ত

 

 

পূর্ব অভিজ্ঞতার সনদ লিবিয়ার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের স্বীকৃতি দিতে অনুরোধ জানান।এ ছাড়া প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী লিবিয়ায় কর্মরত বাংলাদেশি কর্মীদের বৈধতা অর্জনের প্রক্রিয়া সহজ করা এবং ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠানোর জটিলতা কমাতে শ্রমমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। বাংলাদেশিসহ অন্য বিদেশি কর্মীদের বৈধকরণের প্রক্রিয়া নির্ধারণ করার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে জানিয়ে লিবিয়ার শ্রমমন্ত্রী জানান। একই সঙ্গে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠানোর জটিলতা নিরসনে এ কমিটি কাজ করবে বলে তিনি জানান।প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমদের নেতৃত্বে বাংলাদেশের উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদল দুই দিনের জন্য লিবিয়া সফর করছে। এ প্রতিনিধিদলে আছেন জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহাপরিচালক সালেহ আহমদ মোজাফফর, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মীর খায়রুল আলম এবং মন্ত্রীর একান্ত সচিব (যুগ্ম সচিব) আহমদ কবীর।সফরকালে মন্ত্রী ত্রিপলিতে বিভিন্ন পেশায় কর্মরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এ সময় তিনি লিবিয়ায় কর্মরত প্রবাসীদের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান।