কখন বুঝবেন আপনার প্রেমের অনুভূতি মানসিক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে

কখন বুঝবেন আপনার প্রেমের অনুভূতি মানসিক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে

রকমারী

অতিরিক্ত কোনো কিছুই ভালো নয়, এমনকি প্রেম–ভালোবাসাও নয়। সম্পর্কের সুন্দরতম রূপগুলোর একটি প্রেম। তবে ‘অতিরিক্ত’ অনুভূতিশীল হয়ে উঠলে এই প্রেমের সম্পর্কই হয়ে উঠতে পারে বিষাক্ত। এই তিন লক্ষণ দেখে বুঝে নিন চমৎকার প্রেমের সম্পর্কটা আর নিছক প্রেম-ভালোবাসায় আটকে নেই, সেটা ‘অবসেসিভ লাভ ডিজঅর্ডার’-এ পরিণত হয়েছে। সেই সীমানা পার করার পরেই আপনি হিংস্র আচরণ শুরু করেন। এমন পরিস্থিতিতে আপনাকে মানসিক চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

১.
আপনি যতটা ভালোবাসেন, যেভাবে ভালোবাসেন, অপর পক্ষের কাছ থেকেও সেভাবেই আশা করেন। আপনি জোর করেই ভালোবাসা চান। সেই ফিরতি ভালোবাসা না পেলে যেকোনো কিছু করে ফেলতে পারেন আপনি। কিন্তু আপনি একজনকে ভালোবাসলেই সে-ও যে আপনাকেই ভালোবাসবে, এমন কোনো কথা নেই! এটা ধ্রুব সত্য, স্বাভাবিক। আপনি যত সহজে এটা মেনে নেবেন, ততই মঙ্গল।আপনার যদি মনে হয়, ‘ও আমার হলো না, তাহলে ও অন্য কারও হতে পারবে না, অন্য কারও সঙ্গে সম্পর্কে যেতে পারবে না’ তাহলে আপনি মানসিকভাবে অসুস্থ! এ ক্ষেত্রে আপনি শাহরুখ খানের ‘এ দিল হ্যায় মুশকিল’ সিনেমার ডায়ালগটি মনে রাখতেই পারেন। শাহরুখ বলেন, ‘একতরফা প্রেম পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর আর শক্তিশালী ব্যাপার। কেননা, আমার প্রেম আর দশটা প্রেমের মতো দুটো মানুষের ভেতর ভাগাভাগি হয়ে যায় না। এর ওপর কেবল আমার অধিকার। সাবাকে ভালোবাসার জন্য সাবাকে আমার কোনো প্রয়োজন নেই।’

 

২.
যখন আপনি আপনার ভালোবাসার মানুষটাকে ‘অতিরিক্ত অধিকার’ করার মাধ্যমে ভুলে যান যে সে একটা স্বাধীন ভিন্ন সত্তা। তখন আপনি খুশিমতো নিজের বানানো আইন তার ওপর চাপিয়ে দেন। অপর পক্ষকে মানসিক চাপে রাখেন। সম্পর্কে এটা খুবই অস্বাস্থ্যকর চর্চা। অবশ্য হ্যাঁ, এ বিষয়টির অনেকটাই নিজেদের বোঝাপড়ার ওপর নির্ভর করে যে আপনি কতটুকু চাইতে পারবেন আর পারবেন না। তবে আপনি যদি নিজের ইচ্ছা অযৌক্তিক আর অন্যায়ভাবে জোর করে অন্যের ওপর চাপিয়ে দেন, সেটা অন্যায়। যেমন চাকরি করা যাবে না (আপনি চাকরিটা খুব করে করতে চান)। বাইরে যাওয়া যাবে না (বাইরে দরকারি কাজেই যান)। লিপস্টিক কেন পরলে? লিপস্টিক দেওয়া আমার পছন্দ নয় (লিপস্টিক দিতে আপনার ভালো লাগে)। অথবা এই চাকরি আমার পছন্দ নয়, এটা বাদ দিয়ে অন্য কিছু করো (চাকরিটা হয়তো আপনার ভালো লাগে), কেন অমুক দাওয়াতে গেলে না (আপনার হয়তো এ ধরনের সোশ্যাল গ্যাদারিং পছন্দ নয়), চুলটা ছোট রাখবে (আপনার হয়তো চুল একটু বড় রাখা পছন্দ), এই পারফিউম ব্যবহার করবে (ওই পারফিউমের ঘ্রাণটা হয়তো আপনার পছন্দ নয়), অমুকের সঙ্গে মিশবে না, কেন বিয়ের পরও বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা (অফিস শেষে সামান্য সময় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়া হয়তো আপনার মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য জরুরি) ইত্যাদি।আপনার স্বামী বা স্ত্রীকে আপনি ক্রমাগত সন্দেহ করেন।

তাঁর হোয়াটসঅ্যাপ, মেসেঞ্জার, ফোনকল ক্রমাগত চেক করতে থাকেন। সে কোথায় গেল, কার সঙ্গে কথা বলল, কী বলল—এগুলোর ওপর নজরদারি রাখেন। কারও সঙ্গে কথা বললে আপনি সেটা সহ্য করতে পারেন না। তাঁকে নিজের আয়ত্তে রাখতে আপনি নানা বিধিনিষেধ চাপিয়ে দেন!