বেড়েছে পেঁয়াজ-মুরগির দাম, আগের চড়া দামেই সবজি

অর্থনীতি

দফায় দফায় সবজির দাম বাড়ার পর এবার রাজধানীর বাজারগুলোতে বাড়েছে পেঁয়াজের দাম। এর সঙ্গে বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম। সেই সঙ্গে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে ডিম এবং মাছ।

শুক্রবার (১ অক্টোবর) রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আগে থেকেই বাড়তি ব্রয়লার মুরগির দাম সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে আরও ৫ টাকা করে বেড়েছে। পেঁয়াজের দামও কেজিতে বেড়েছে ৫ টাকা। শিমের দাম কেজিতে ২০ টাকা কমলেও অন্যান্য বেশিরভাগ সবজির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

ব্যবসায়ীদের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, বাজারে এখন বেশিরভাগ সবজির কেজি ৫০ টাকার ওপরে। শুধু কচুরমুখী ও পেঁপের কেজি ৫০ টাকার নিচে পাওয়া যাচ্ছে। এ দু’টি সবজির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকা।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা প্রতিকেজি পেঁয়াজ বিক্রি করছেন ৪৮ থেকে ৫০ টাকা। যা গত শুক্রবার (২৪ সেপ্টেম্বর) পেঁয়াজের কেজি ছিল ৪৫ টাকা। এমনকি বৃহস্পতিবারও (৩০ সেপ্টেম্বর) বিভিন্ন বাজারে পেঁয়াজের কেজি ৪৫ টাকা বিক্রি হয়।

পেঁয়াজের দামের বিষয়ে রামপুরার ব্যবসায়ী হামিদ মোল্লা বলেন, হঠাৎ করেই পাইকারিতে পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেছে। একদিনে পাইকারিতে পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ৫ টাকা। আমার পেঁয়াজ আগে কেনা, তাই ৪৮ টাকা কেজি বিক্রি করছি। আজকে পেঁয়াজ ৫০ টাকার নিচে বিক্রি করার সুযোগ নেই।

পেঁয়াজের দামের বিষয়ে কারওয়ানবাজারের ব্যবসায়ী নোয়াব আলী বলেন, বাজারে দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ কিছুটা কমেছে। এ কারণে ফরিদপুরের বাজারে পেঁয়াজের দাম বাড়তি। তাই আমাদের এখন বাড়তি দামে পেঁয়াজ সংগ্রহ করতে হচ্ছে। পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে সামনে পেঁয়াজের দাম আরও বাড়তে পারে।

অন্যদিকে, ব্যবসায়ীরা ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি করছেন ১৬৫ থেকে ১৭০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৫৫ থেকে ১৬৫ টাকা। আর চলতি মাসের শুরুর দিকে ছিল ১২০ থেকে ১৩০ টাকার মধ্যে।

ব্রয়লার মুরগির মতো পাকিস্তানি কক বা সোনালী মুরগির দাম চলতি মাসে দফায় দফায় বেড়েছে। চলতি মাসের শুরুর দিকে ২১০ থেকে ২৩০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া সোনালী মুরগির দাম কয়েক দফা বেড়ে এখন ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। তবে সপ্তাহের ব্যবধানে সোনালী মুরগির দাম নতুন করে বাড়েনি।

মুরগির দামের বিষয়ে খিলগাঁওয়ের ব্যবসায়ী মো. আল আমিন বলেন, সবধরনের মুরগির দাম বাড়ায় এখন বাজারে ব্রয়লার মুরগির চাহিদা বেশি। তাছাড়া হোটেল রেস্তোরাঁগুলোতে বিক্রি বাড়ায় মুরগির চাহিদা বেড়েছে। এ কারণেই মুরগির দাম বাড়তি।

মুরগির সঙ্গে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে ডিম। ফার্মের মুরগির এক ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকা। আর মুদি দোকানে এক পিস ডিম বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১১ টাকা।

সবজির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা এখন সব থেকে বেশি দামে বিক্রি করছেন গাজর। এক কেজি গাজর ১২০ থেকে ১৬০ টাকা বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ৮০ থেকে ১০০ টাকা। এ হিসাবে সপ্তাহের ব্যবধানে গাজরের দাম কেজিতে ৬০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

শীতের আগাম সবজি শিমের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১২০ থেকে ১৪০ টাকা। টমেটোর কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা। এ সবজিটির দাম সপ্তাহের ব্যবধানেও অপরিবর্তিত রয়েছে।

এ তিন সবজির সঙ্গে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে ঝিঙে, চিচিঙ্গা, বরবটি, ঢেঁড়শ, পটল, করলা। ঝিঙের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা, করলা বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি, পটলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা, ঢ়েঁড়সের কেজি পাওয়া যাচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকার মধ্যে, বরবটির কেজি পাওয়া যাচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে এ সবজিগুলোর দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

শিমের পাশাপাশি বাজারে আসা শীতের আগাম সবজি মুলা, ফুলকপি ও বাঁধাকপির দামও বেশি চড়া। ছোট ফুলকপি ও বাঁধাকপির পিস বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৫০ টাকা। মুলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা।

এছাড়া কাঁচকলার হালি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, লাল শাকের আঁটি ১০ থেকে ২০ টাকা, মুলা শাকের আঁটি ১০ থেকে ২০ টাক, কলমি শাকের আঁটি ৫ থেকে ১০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এগুলোর দাম সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে।

সবজির দামের বিষয়ে কারওয়ানবাজারের ব্যবসায়ী আলী সরদার বলেন, বন্যা ও বৃষ্টির কারণে সবজি খেতের অনেক ক্ষতি হয়েছে। এ কারণে সবজির দাম বাড়তি। তবে আস্তে আস্তে বাজারে শীতের আগাম সবজির সরবরাহ বাড়ছে। তাই আমাদের ধারণা কিছুদিনের মধ্যে সবজির দাম কিছুটা কমে আসবে।