বৌ-শাশুড়ির সঙ্গে লাশ হওয়া সেই যুবকের

টাঙ্গাইলে পরিচয় মিলেছে বৌ-শাশুড়ির সঙ্গে লাশ হওয়া সেই যুবকের

ঢাকা দেশ জুড়ে বাংলাদেশ

টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলায় বউ-শাশুড়ির মরদেহের সঙ্গে উদ্ধার হওয়া সেই যুবকের পরিচয় পাওয়া গেছে। নিহত যুবকের নাম শাহজালাল ইসলাম সোহাগ (৩০)। তিনি পাশের কালিহাতী উপজেলার সাতুটিয়া গ্রামের সোহরাব আলীর ছেলে ও নিহত গৃহবধূ সুমি বেগমের (২৫) সাবেক স্বামী।

 

 

এর আগে শনিবার (৩০ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৯টায় উপজেলার দিগর ইউনিয়নের কাশতলা খামারপাড়া এলাকার সৌদি প্রবাসী জয়েন উদ্দিনের বাড়ি থেকে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত অপরজন হলেন সুমির শাশুড়ি জমিলা বেগম (৬০)। এ ঘটনায় সুমির শিশু সন্তান সাফিকেও (২) কুপিয়ে আহত করা হয়েছে।

 

গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয় বলে জানিয়েছিলেন দিগর ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ মামুন। পরে সেখান থেকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। নিহত জমিলা বেগমের ছোট ছেলের স্ত্রী শাহনাজ বেগম জানান, প্রতিদিনের মতো ফজরের নামাজ শেষে শাশুড়িকে ডাকতে যান তিনি। কিন্তু কোনো সাড়া পাননি। পরে বারান্দার গ্রিলে লাঠি দিয়ে আঘাত করেন। এতেও সাড়া না পেয়ে তিনি চলে যান। পরে সকাল ৭টার দিকে পুনরায় ডাকাডাকি শুরু করেন।

 

 

 

তখন দেখতে পান ঘরের দরজায় তালা দেওয়া। এ সময় প্রতিবেশীদের ডেকে আনলে তারা শাবল দিয়ে তালা ভেঙে ঘরে ঢুকেন এবং তিনজনের লাশ দেখতে পান। এরপরেই বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়। নিহত সুমির মা রেখা বেগম জানান, তাদের কোনো সন্তান ছিল না। সুমিকে পাশের এলাকার বাছেদ মিয়ার কাছ থেকে দত্তক নেন। নয় বছর আগে প্রবাসী জয়েনের সঙ্গে সুমির বিয়ে হয়। এই সংসারেই সুমি একটি ছেলে সন্তানের জন্ম দেন। এরপর তিনি মোবাইল ফোনে শাহজালালের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। তারা পালিয়ে গিয়ে বিয়েও করেছিলেন।

 

 

 

তবে আট মাস পর সুমি আবার আগের সংসারে ফিরে আসেন। শাহজালালকে তালাক দিয়ে বিয়ে করেন জয়েনকে। বিয়ের দুই মাস পর জয়েন আবার সৌদি আরবে চলে যান। এদিকে যে ঘর থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, সেই ঘরের দেওয়ালে রক্ত দিয়ে লেখা একটি চিরকুট পাওয়া গেছে। তাতে লেখা—‘এমনটা হতো না যদি আমার সুমী আমার কাছে থাকতো। এই সবকিছুর জন্য সুমীর বাবা দায়ী।

 

 

 

’ অন্যদিকে এদিন নিহত শাহজালালের বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। প্রতিবেশীরা জানান, সকালে ঘরে তালা দিয়ে বাড়ির সবাই পালিয়ে গেছেন। দিগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ মামুন বলেন, পরকীয়ার কারণে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। জমিলা বেগমের দুই ছেলেই প্রবাসে থাকে।

 

 

 

বাড়িতে কোনো পুরুষ মানুষ ছিল না। তিনি দুই ছেলের বৌকে নিয়ে থাকতেন। ইতোমধ্যে পুলিশ, র‌্যাব, পিবিআই ও সিআইডি’র কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ বিষয়ে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার বলেন, এ ঘটনার রহস্য উদঘাটনের জন্য আলামত সংগ্রহ করা হচ্ছে। এছাড়া ঘটনাস্থল থেকে একটি রক্তমাখা ধারালো ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। আর দেয়ালে লেখার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।